ভোলার তজুমদ্দিনে চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে রাতভর আটকে রেখে নির্যাতনের পর স্ত্রীকে পৈশাচিকভাবে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শ্রমিক দল ও ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী নিজেই থানায় মামলা করেছেন।
জানা গেছে, শনিবার (২৮ জুন) রাতে উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নের এক যুবককে একটি বাসায় ডেকে নিয়ে চাঁদার দাবিতে রাতভর নির্যাতন চালানো হয়।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন— তজুমদ্দিন উপজেলা শ্রমিক দলের ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন, তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাসেল, তার ভাই আলাউদ্দিনসহ আরও কয়েকজন।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, নির্যাতনের একপর্যায়ে তার স্বামীকে মারধর করে রক্তাক্ত করে রাখা হয়। এরপর রোববার (২৯ জুন) সকালে তাকে বলা হয় ৪ লাখ টাকা নিয়ে আসলে স্বামীকে ছেড়ে দেওয়া হবে। স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে তিনি ঘটনাস্থলে গেলে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাকে ধরে ফেলে অভিযুক্তরা। তিনি বারবার “ভাই” বলে পায়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে ধর্ষকদের কাছে ক্ষমা চাইলে তারা কর্ণপাত না করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, নির্যাতনের সময় এসএস পাইপ ও রড দিয়ে তার স্বামীকে পেটানো হয়। পরে তাকে সরিয়ে রেখে তিনজন মিলে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ শেষে স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ওই নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করলে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে তিনি ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহায়তা চাইলে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভুক্তভোগী দম্পতিকে থানায় নিয়ে যায়।
তজুমদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মহব্বত খান জানান, ঘটনায় একটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে,একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অপরদিকে অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম মো. ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার অবস্থান নিশ্চিত করা যায়নি।
এই বর্বর ও ন্যক্কারজনক ঘটনার বিচার দাবি করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক, যাতে কেউ আর এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।
বিআরইউ