ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় স্বামীকে রাতভর শারীরিকভাবে নির্যাতনের পর স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তজুমদ্দিন উপজেলা ও তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশের যৌথফোর্স।
বুধবার (২ জুলাই) দিবাগত রাতে নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে মামলার প্রধান আসামি তজুমদ্দিন উপজেলা বাস্তুহারা দলের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে এবং দ্বিতীয় আসামি উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিনকে ভোলার বোরহানউদ্দিন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
একই রাতে লঞ্চঘাট এলাকা থেকে পঞ্চম আসামি মো. মানিককে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৮। এর আগে, ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে ভিকটিমের স্বামীর ছোট স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহাব্বত খান বলেন, এ পর্যন্ত চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মো. শরিফুল হক। তিনি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নির্দেশ দেন।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে।’ ইতোমধ্যে বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলো পৃথক পৃথক চিঠির মাধ্যমে ঘটনায় জড়িতদের বহিষ্কার করেছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন— তজুমদ্দিন উপজেলা বাস্তুহারা দলের সভাপতি মো. আলাউদ্দিন, উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন এবং তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাসেল আহমেদ ও একই কলেজের ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন সজীব।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে তজুমদ্দিন উপজেলার কামারপট্টি এলাকায় চাঁদা না পাওয়ার জেরে আলাউদ্দিন ও ফরিদ উদ্দিনের নেতৃত্বে ভিকটিমের স্বামী রুবেলকে মারধর করা হয় এবং তার স্ত্রীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় মোট ১১ জনকে আসামি করে তজুমদ্দিন থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীর স্বামী রুবেল।
পুলিশ বলছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ রেহাই পাবে না। স্থানীয়রা এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
বিআরইউ