টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, শুটকি মাছ, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
রোববার সকালে উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের বলাসুতী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী দুই পরিবার—শান্তি বেগম ও নূরজান বেগম—ধনবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে তারা জানান, প্রতিবেশী মৃত তমেজ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম, তার ছেলে মিজানুর রহমান ও আমিনুর রহমান এবং ওমেদ আলী ও তার ছেলে রাসেল মিয়াসহ একটি সংঘবদ্ধ দল ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে তাদের বসতবাড়িতে হামলা চালায়।
হামলাকারীরা ঘরের টিন ও কাঠামো ভেঙে ছিন্নভিন্ন করে দেয়। এ সময় ঘরে থাকা একটি ভ্রাম্যমাণ দোকানের ৫০ হাজার টাকার শুটকি মাছ, ৬০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫০ হাজার টাকা লুট করে নেয়। পাশের ঘর থেকে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকারও লুটের অভিযোগ করা হয়।
বাঁধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা লাঠি ও কাঠ নিয়ে হামলার চেষ্টা করে এবং অভিযোগ না করার জন্য প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায় বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
অসহায় পরিবার দুটি অভিযোগ করে বলেন, "এখন বর্ষার দিনে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে। এমন স্বাধীন দেশে দিনের বেলায় ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও প্রাণনাশের হুমকি—এ কোন নৈরাজ্য? আমরা বর্তমান সরকার, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বিচার দাবি করছি।”
এ ঘটনায় এলাকাবাসীও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
স্থানীয় নূরুল ইসলাম, আব্দুল বারেক, রফিকুল ইসলাম, ছানোয়ারা বেগম, রওশনআরা, ছালেহা বেগম প্রমুখ জানান, “দুপুরবেলা জনসম্মুখে এমন তাণ্ডব চালানো হয়েছে যা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে।”
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ২ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি নূর মোহাম্মদ বলেন, “জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হোক।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিফা বলেন, “গরিব মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া মানবিকতার চরম লঙ্ঘন। দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
বীরতারা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমির হোসেন তারা বলেন, “দিনে কাজ করে মানুষ রাতে একটু শান্তিতে ঘুমাতে চায়। পাখির বাসাও কেউ ভাঙে না, কিন্তু মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া অন্যায়। এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন।”
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি; বাড়ি তালাবদ্ধ ছিল। ফোনেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম শহিদুল্লাহ বলেন, “শুটকি ব্যবসায়ীদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
ইএইচ