সিলেটে গর্ভবতী স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা, সন্তানের মৃত্যু

সিলেট ব্যুরো প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ০৮:১০ পিএম
সিলেটে গর্ভবতী স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা, সন্তানের মৃত্যু

সিলেটের কানাইঘাটে ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সাবানা বেগম (২০) এর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন স্বামী হোসেন আহমদ চৌধুরী আক্তার (৪৫)। 

ঘটনার তিন দিন পলাতক থাকার পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ তাকে সোমবার আটক করেছে।

পুলিশ তাকে কানাইঘাট উপজেলার সাতবাঁক ইউনিয়নের চরিপাড়া গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আটক করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাত ৮টার দিকে কানাইঘাটের লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কান্দলা গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর আব্দুল জব্বারের মেয়ে সাবানা বেগমের ওপর এই নির্মম হামলা চালানো হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ চলছিল। সেদিন অসুস্থ স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে নিতে যান আক্তার। শ্বাশুড়ি বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। কিছুক্ষণ পর বাজার থেকে একটি টাইগার ড্রিংকের বোতলে পেট্রোল কিনে এনে ঘুমন্ত স্ত্রীর গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যান।

সাবানার আর্তচিৎকারে পরিবারের সদস্য ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নেভান। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালে সাবানা বেগম একটি মৃত কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, স্ত্রীর গায়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগে হোসেন আহমদ চৌধুরী আক্তারকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শনিবার রাতেই আমি হাসপাতালে গিয়ে সাবানার অবস্থা দেখি। পরে পুলিশকে জানানো হলে মৃত নবজাতককে দাফন করা হয়।’

স্থানীয়রা জানান, আক্তার দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অসুস্থ ছিলেন এবং একসময় কুয়েতে ছিলেন। তবে এমন নির্মম ঘটনার পেছনে তারা কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না।

সাবানার বাবা আব্দুল জব্বার বলেন, ‘মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম ভেবে ছিলাম ভালো থাকবে। এখন সে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।’

ইএইচ