মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় এক মাদ্রাসা সুপারকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার সাবেক সভাপতিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।
অভিযোগে অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বরিশাট গ্রামের চৌধুরী রেজাউল হক মিন্টু, আজাদ মোল্লা এবং দড়িবিলা গ্রামের আলী আজম মাস্টার।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টার দিকে অভিযুক্তরা আরও পাঁচ-সাতজন অজ্ঞাত লোকজন নিয়ে বরিশাট পূর্বপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারকে তার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যান চাকদাহ ব্রিজের পাশে। সেখানে তাকে গালিগালাজ, কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে জোর করে মাদ্রাসার প্যাডে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়, যেখানে রেজাউল হকের ভাতিজা জিয়াউল হক টুটুলের নাম ছিল।
সুপারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী মহল মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ নিতে নানা তৎপরতা চালিয়ে আসছিল। সাবেক সভাপতি রেজাউল হক মিন্টু তার অসুস্থ পিতার নাম ব্যবহার করে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি মাদ্রাসার সাধারণ তহবিল থেকে নীতিবহির্ভূতভাবে এক লাখ টাকা ঋণ নেন। একই সময় পুরাতন টিনসেট ঘর বিক্রি করে আরও ৩৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন, যা আজও ফেরত দেননি।
মাদ্রাসার সাবেক সদস্য টিপুল মোল্লা বলেন, ‘টিনসেট ঘরটির প্রকৃত মূল্য ছিল ৫০ হাজার টাকার বেশি, কিন্তু তা যথাযথভাবে বিক্রির নথি ছাড়াই তুলে নেয়া হয়।’
এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দকৃত দুই লাখ টাকার মধ্যে প্রথম কিস্তির ১ লাখ টাকা উত্তোলন করা হলেও কোনো কাজ হয়নি এবং অর্থ ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট হিসাবও পাওয়া যায়নি। অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমেও অর্থ আত্মসাৎ করেছেন অভিযুক্তরা।
মাদ্রাসা সুপার বলেন, ‘যে কাগজে জোর করে স্বাক্ষর করানো হয়েছে, সেটি ভবিষ্যতে আমার বিরুদ্ধে অপব্যবহার হতে পারে। আমি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।’
মাদ্রাসার অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক জিয়াউল হক ফরিদ বলেন, ‘নির্বাচনী তপশিল ঘোষণার পর অভিযুক্তরা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সময়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে নাম লিখিয়ে সুপারকে জোর করে স্বাক্ষর করায়, যা বেআইনি ও নিন্দনীয়।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রেজাউল হক মিন্টু কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গণি বলেন, ‘কোনো নির্বাচিত সভাপতি বা সদস্য তহবিল ব্যবহারে জড়িত হতে পারেন না। এটি স্পষ্টভাবে বিধি বহির্ভূত।’
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী বলেন, ‘অভিযোগটি খতিয়ে দেখে আইনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ইএইচআর