নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশপুকুর গ্রামে তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধ, স্থায়ী সমাধান এবং তুহিন বাঁধ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকাল ১১টায় তিস্তা নদীর তীরে আয়োজিত এই মানববন্ধনে শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন, জামায়াতে ইসলামী ডিমলা উপজেলা শাখার নায়েবে আমির কাজী মাওলানা হাবিবুর রহমান, খালিশা চাপানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহিদুজ্জামান সরকার, সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল হক হুদা, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুল করিম, জামায়াতে ইসলামী খালিশা চাপানি ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি সেরাজুল ইসলামসহ স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ।
বক্তারা জানান, তিস্তা নদীভাঙনে ইতোমধ্যে হাজার হাজার একর ফসলি জমি ও শত শত বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে ভাঙন তুহিন বাঁধের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে, যা বাইশপুকুর, ছাতুনামা, কেল্লাপাড়া এবং পার্শ্ববর্তী জলঢাকা উপজেলার হলদিবাড়ী ও ডাউবাড়ীসহ কয়েকটি গ্রামকে হুমকির মুখে ফেলেছে। বাঁধটি ভেঙে গেলে আশ্রয়ণ প্রকল্প, আশ্রয়ণ সেল্টার, বাইশপুকুর ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাইশপুকুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অসংখ্য মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির এবং লক্ষাধিক মানুষের বসতি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, “এক রাতে আমার সব ঘরবাড়ি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে বাঁধের উপরেই থাকি। বাঁধও ভেঙে গেলে আমাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা থাকবে না।”
গৃহবধূ রহিমা খাতুন বলেন, “আমরা এখানেই জন্মেছি, এখানেই ঘর বেঁধেছি। নদী সব কিছু কেড়ে নিচ্ছে, এখন থাকার জায়গা নেই। সরকার যদি দ্রুত বাঁধ ঠিক না করে, আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব।”
মানববন্ধনে বক্তারা দ্রুত ভাঙন রোধে জিও টিউব ব্যাগ ও পাথর ফেলে বাঁধ রক্ষার পাশাপাশি স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী শাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান। পরে এলাকাবাসী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ইএইচ