অসহায় মাসুদ পেলো জীবিকার নতুন পথ

আরিফ হোসেন, বরিশাল ব্যুরো প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০২:৩০ পিএম
অসহায় মাসুদ পেলো জীবিকার নতুন পথ

একসময় ফুলের দোকানে কাজ করতেন মাসুদ, ফুলের মালা গেঁথে সংসার চালাতেন। হঠাৎ তার জীবনে নেমে আসে এক অন্ধকার অধ্যায়। এরপর থেকেই মাসুদ কাজ হারিয়ে পথে পথে ভিক্ষুকের মতো জীবন যাপন করতে বাধ্য হন।

মাসুদের জীবনের অর্ধেক সময় কেটেছে নগরীর সদর রোডের ফুলের দোকানে। গোলাপ হাতে তার চোখে যে আলো ফুটেছিল, তা ছিল স্বপ্ন, আশা এবং কৃতজ্ঞতার রঙে রাঙানো—দীর্ঘ অন্ধকারের পর ভোরের সূর্যের প্রথম কিরণ যেন তার জীবন স্পর্শ করেছিল। 

অন্যদিকে বাড়িতে অপেক্ষা করছেন বাকপ্রতিবন্ধী স্ত্রী ও দুই সন্তান, যাদের হাসি আর ক্ষুধা মেটাতে মাসুদকে প্রতিদিন নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো।

গোলাপ বিক্রি করাই ছিল তার স্বপ্ন, কিন্তু অর্থের অভাবে সেই স্বপ্ন বহুদিন ধরেই ধুলোর নিচে চাপা পড়ে ছিল।

সম্প্রতি বরিশাল জিলা স্কুলের ফরিদ ভাইয়ের মাধ্যমে মাসুদের সাথে দেখা করেন বরিশাল জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ। তাদের আলোচনা শেষে মাসুদকে একটি আয়ের পথ বের করে দেওয়া হয়।

নগরীর বেলস পার্কের ল্যাম্পপোস্টের নিচে ফরিদ ভাইয়ের সহায়তায় মাসুদকে দেওয়া হয় একটি টেবিল, বসার জন্য একটি টুল এবং বিক্রির জন্য ১০০টি লাল গোলাপ। এখন মাসুদ ফুল বিক্রি করে ৩–৪ শত টাকা দৈনিক আয় করছেন। সেই আয় দিয়ে তিনি প্রতিবন্ধী স্ত্রী ও সন্তানদের জীবনযাপন ও খাদ্য নিশ্চিত করতে পারছেন।

মাসুদ জানান, “আগে ফুলের দোকানে কাজের চাপ অনেক বেশি ছিল। কয়েক বছর আগে মালিকের কারণে কাজ হারানোর পর আমি কোনো কাজ না পেয়ে পথে বসে পড়ি। এখন সমাজসেবা বিভাগের সাজ্জাদ স্যার ও তার পরিচিতদের সহায়তায় আমি আবার জীবিকার পথে ফিরে এসেছি। এখন আর কেউ আমাকে পাগল বলতে পারবে না। আমি নিজেই জীবিকা চালাচ্ছি।”

বরিশাল জেলা সমাজসেবার সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, “অসহায় মানুষ দেখলে আমার মন কেঁদে যায়। আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সাহায্য করি। প্রয়োজনে বন্ধু মহলের সাহায্য নিয়েও তাদের জীবনযাত্রা সহজ করার চেষ্টা করি।”

ইএইচ