আগামীকাল ২০ আগস্ট (বুধবার) গাইবান্ধা জেলা সদর হরিপুরে বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। সেতুর নামকরণ করা হয়েছে মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ ভাসানীর নামে। স্থানীয়রা এটি মাওলানা ভাসানী সেতু হিসেবে উল্লেখ করছেন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা সংযুক্ত করা এই সেতু উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ ও উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। অনুষ্ঠান সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে।
সেতুটি ১,৪৯০ মিটার দীর্ঘ এবং ৯.৬০ মিটার প্রশস্ত। উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে দুই তীরের মানুষের যুগের পর যুগের দুর্ভোগের অবসান ঘটবে। এটি তিস্তা নদীর উপর নির্মিত তৃতীয় সেতু। এর পূর্বে ২০১২ সালে লালমনিরহাটে ৮৭ কোটি টাকায় ৭৫০ মিটার ও ২০১৮ সালে ১৩১ কোটি টাকায় ৮৫০ মিটার সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল।
প্রকল্পটি ২০১৪ সালে অনুমোদিত হয় এবং ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনকে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে ২০২১ সালে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ২০২৫ সালে সম্পন্ন হওয়া এই সেতুর মোট নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে মূল সেতুর ব্যয় ৩৬৭ কোটি ও অন্যান্য সুবিধাসমূহে ৩৬৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
সেতুতে রয়েছে ২৯০টি পাইল, ১৫৫টি গার্ডার, ৩০টি পিলার এবং ২৮টি স্প্যান। সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ৮৬ কিলোমিটার, যেখানে ১২টি ব্রিজ এবং ৫৮টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ হয়েছে ১৩৩ একর এবং নদী শাসন করা হয়েছে উভয় পাড়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেতু চালু হলে কৃষিপণ্য পরিবহন সহজ হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ প্রসারিত হবে এবং তিস্তার ভাঙন কমবে। এছাড়া ঢাকা ও রংপুরের দূরত্বও কমে আসবে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তিস্তাপারের মানুষের স্বপ্নপূরণ ঘটিয়ে হরিপুর তিস্তা সেতুর উদ্বোধন উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।
ইএইচ