দেশের প্রধান অর্থনৈতিক উদ্বেগ হয়ে উঠেছে মূল্যস্ফীতি। সম্প্রতি বছরগুলোতে মূল্যস্ফীতির কারণেই অর্থনৈতিক উদ্বেগ বিরাজ করছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে, তবে এখনও উদ্বেগ রয়ে গেছে। মূলত খাদ্য, বাড়ি ভাড়া, পোশাক ও তামাকের কারণেই মূল্যস্ফীতিতে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ এসব খাতে সাধারণ মানুষের খরচ বেড়েছে।
বুধবার (৭ মে) এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও একনেকের চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় মাসিক ইকোনোমিক আপডেট ও আউটলুক প্রকাশ করে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)।
প্রতিবেদনে জিইডি জানায়, গত অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়ে ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশে পৌঁছায়। ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে শীতকালীন সবজির কারণে মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করে। ১২ মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো খাদ্য মূল্যস্ফীতি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে একক অঙ্কে নেমে আসে এবং ২০২৫ সালের মার্চ মাসে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশে অব্যাহত থাকে। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে প্রায় স্থিতিশীল রয়েছে।
রিপোর্টে আরও দেখা গেছে, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির প্রধান অবদান ছিল খাদ্য (৪২ দশমিক ৭১ শতাংশ)। এরপরে মূল্যস্ফীতির জন্য দায়ী গৃহায়ন (১৩ দশমিক ০৯ শতাংশ) এবং পোশাক ও জুতা (৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ)। বিস্তৃত শ্রেণী অনুসারে সাধারণ মূল্যস্ফীতির প্রধান অবদান হলো চাল (১৪ দশমিক ৬২ শতাংশ), মাছ (১১ দশমিক ৫৮ শতাংশ) এবং শাকসবজি (৬ দশমিক ০৮ শতাংশ)। মৌসুমী সবজির কম দাম খাদ্যের দাম কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া পরিবহন, শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও সংস্কৃতিকে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হয়েছে।
জিইডি সদস্য (সচিব) ড. মনজুর হোসেন বলেন, বিগত সময়ে দেখা গেছে খাদ্যের কারণে মূল্যস্ফীতি বেশি ছিল। তবে সবচেয়ে বেশি দায়ী চাল। দেশে আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বন্যা ছিল। ফলে চালের উৎপাদনও কম ছিল। দামও বাড়তি ছিল। চালের উৎপাদন বাড়াতে হবে। এছাড়া বাড়ি ভাড়া, পোশাকের কারণেও মূল্যস্ফীতি বাড়তি ছিল। তবে এটা ধীরে ধীরে কমে আসছে। সামনে মূল্যস্ফীতি আরও কমবে।
শহর থেকে গ্রামে মূল্যস্ফীতি বাড়তি হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মূলত সাপ্লাই চেইন সঠিকভাবে না হওয়ার কারণেই শহরের থেকে গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি হয়ে থাকে।
আরএস