বিডা চেয়ারম্যান

৭ ট্রিলিয়ন ডলারের হালাল বাজারে জায়গা পেতে কাজ করছে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ১২:০৪ পিএম
৭ ট্রিলিয়ন ডলারের হালাল বাজারে জায়গা পেতে কাজ করছে বাংলাদেশ

সাত ট্রিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক হালাল অর্থনীতিতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান নিশ্চিত করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘হালাল ইকোনমি ৩৬০: ড্রাইভিং গ্লোবাল গ্রোথ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “বিশ্বের অধিকাংশ হালাল পণ্য বর্তমানে অমুসলিম দেশগুলো উৎপাদন করছে, যা আমাদের মতো মুসলিম-প্রধান দেশের জন্য একদিকে যেমন দুঃখজনক, অন্যদিকে এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগও। সরকার হালাল অর্থনীতির সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বাংলাদেশকে এই খাতে আঞ্চলিক হাবে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।”

বিডা চেয়ারম্যান আরও জানান, হালাল পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সনদায়নের সুবিধা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “হালাল অর্থনীতির পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এ অংশীদারিত্ব অপরিহার্য, যা উদ্ভাবন ও টেকসই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।”

সেমিনারের শুরুতে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই) সভাপতি সাব্বির এ খান অংশগ্রহণকারীদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্য ও সেবার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশও এ খাতে একটি প্রতিযোগিতামূলক শক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “তৈরি পোশাক রপ্তানির বাইরে বাংলাদেশ হালাল পণ্যের অন্যতম যোগানদাতা হয়ে উঠতে পারে। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা, সহজ সনদপ্রক্রিয়া ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলে ২০৩০ সালের মধ্যে শুধু মালয়েশিয়াতেই বাংলাদেশ ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের হালাল পণ্য রপ্তানি করতে সক্ষম হবে।”

বিএমসিসিআই সভাপতি আরও জানান, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক হালাল খাদ্যবাজারের আকার দাঁড়াবে প্রায় ৩.৩০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০৩৪ সালের মধ্যে বেড়ে হবে ৯.৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার। এই সময়ের মধ্যে বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধির হার থাকবে ১২.৪২ শতাংশ।

সেমিনারের বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মোহাম্মদ শুহাদা ওসমান। তিনি বলেন, “হালাল অর্থনীতি গঠনে মালয়েশিয়া যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, তা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভাগ করে নিতে আমরা আগ্রহী। এই সহযোগিতা উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বড় ধরনের ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ মালয়েশিয়া থেকে প্রায় ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করলেও, রপ্তানি হয়েছে মাত্র ২৯৩.৫১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য।

বিএমসিসিআই আয়োজিত এ সেমিনারে শিল্প উদ্যোক্তা, নীতিনির্ধারক ও বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। তারা হালাল অর্থনীতির টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও নীতিগত সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ইএইচ