হাবিপ্রবিতে ২৪ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২, ০৯:২৩ পিএম
হাবিপ্রবিতে ২৪ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ২৪তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস । ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন ও বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন এবং এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতি বছর এই দিনের গুরুত্ব অনুধাবন করে “বিশ্ববিদ্যালয় দিবস” পালন হয়ে আসছে। ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর মৃত্যুতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘোষিত ১১ সেপ্টেম্বর এর কর্মসূচিসমূহ একদিন পিছিয়ে আজ পালন করা হয়। বিগত বছর গুলোর ধারাবাহিকতায় এ বছরও বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে হাবিপ্রবিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়। কর্মসূচির শুরুতেই সকাল সাড়ে ৯ টায় প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান ও রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. সাইফুর রহমান। এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

পরবর্তীতে মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর এর নেতৃত্বে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও এর সামনের মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় নেচে গেয়ে শিক্ষার্থীরা দিনটি উদযাপন করেন। র‌্যালি শেষে প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে বেলুন উড্ডয়ন ও আকাশে শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে একই স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জ্বালানি সাশ্রয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সাইকেল র‌্যালির উদ্বোধন করেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান। এ সময় তিনি বলেন, আজ হাবিপ্রবি পরিবারের জন্য একটি আনন্দের দিন। তিনি বলেন আজকের এই সাইকেল র‌্যালির মূল উদ্দেশ্য হলো জ্বালানি ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। দিনটি উপলক্ষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং আজকের বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজনের জন্য ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এছাড়াও ২৪ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বাদ জোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বিকেল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সম্মুখে অগ্রযাত্রায় হাবিপ্রবির ২৪ বছরে পদার্পণ শিরোনামে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ফ্ল্যাশ মুভ এর আয়োজন করা হয় এবং বিকেল সাড়ে ৩ টায় টিএসসি সম্মুখস্থ মুক্তমঞ্চে তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান গুলো উপভোগ করেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান।

দিনটি উপলক্ষে দেয়া বাণীতে মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ আজ স্বপ্ন দেখে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার। আর তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে গড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল শাখায় আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে গড়ে তুলতে হবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য যোগ্য করে। আর চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে সামগ্রিক কৃষি ব্যবস্থাপনায় রোবটিক্স, মেশিন লার্নিং, ইন্টারনেট অব থিংস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, সাইবার সিকিউরিটি, মাইক্রোপ্রোসেসর ডেভেলপমেন্টসহ তথ্য প্রযুক্তির প্রায়োগিকতাই মুখ্য বলে বিবেচিত হচ্ছে, আর এ বিষয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ব্যাপক সম্ভাবনা। এই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে আমরা গ্রহণ করছি বিভিন্ন পদক্ষেপ। শিক্ষার্থীদেরকে যোগ্য করে গড়ে  তুলতে যেমন স্থাপিত হচ্ছে আধুনিক শ্রেণিকক্ষ ও গবেষণাগার, ঠিক তেমনি তাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে চালু রয়েছে ডীনস্ এওয়ার্ড। আমরা হাবিপ্রবি হতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ার পাশাপাশি উচ্চ মানসম্পন্ন গবেষণা কার্যক্রমও পরিচালনায় আরো গতিসঞ্চার করতে চাই যাতে করে জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও বিশ্ববিদ্যালয়টি ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করে। আমরা শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কাযক্রমের পাশাপাশি খেলাধুলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে আরো বেশি করে সম্পৃক্ত করতে চাই যাতে করে তারা তাদের মেধার সর্বোচ্চ প্রয়োগে শিক্ষা কার্যক্রম সমাপনান্তে সনদপত্র গ্রহণের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শ ধারন ও লালন করে মানবিক মানুষ হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে পারে। আমরা ২৪তম বছরটি সফলভাবে শেষ করার পাশাপাশি আগামী ২৫তম প্রতিষ্ঠাবর্ষে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে রজত জয়ন্তী উদযাপন করতে চাই।

এসএম