ভর্তি পরীক্ষাকে ঘিরে প্রশ্নফাঁসের গুজব, ফেসবুকে সক্রিয় প্রতারক চক্র অধরা

বাকৃবি প্রতিনিধি: প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম
ভর্তি পরীক্ষাকে ঘিরে প্রশ্নফাঁসের গুজব, ফেসবুকে সক্রিয় প্রতারক চক্র অধরা

এসএসসি ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার মৌসুমে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রশ্নফাঁসের ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্র। কৃষি গুচ্ছ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক পরীক্ষাকে ঘিরে ফেসবুক ও টেলিগ্রাম প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ছড়ানো হচ্ছে বিভ্রান্তিকর তথ্য।

‘১০০% কমন’, ‘মূল প্রশ্নপত্র আগে’—এমন লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে চক্রগুলো। একটি পেজে ১২ এপ্রিলের কৃষি গুচ্ছ পরীক্ষার প্রশ্ন ‘ফাঁস’ হয়েছে বলে দাবি করা হয়। আবার ‘বিডি এডুকেশন টিপস’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে রাজশাহী ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন সরবরাহের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব পোস্টের অনেকেই আগে ফাঁকা বা সাধারণ লেখা দিয়েই পোস্ট করে পরে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র যুক্ত করে পোস্ট এডিট করে। এতে প্রমাণিত হয়—এগুলো মূলত পরীক্ষার পর ‘কমন হয়েছে’ দাবি করে শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জনের কৌশল মাত্র।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও কৃষি গুচ্ছ কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব কৃষিবিদ মো. হেলাল উদ্দীন বলেন, “আমি দেখি নাই, এমন কিছু ঘটেনি। প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো ঘটনা আমরা পাইনি। পরীক্ষা অত্যন্ত সন্তোষজনকভাবে সম্পন্ন হয়েছে।”

এখন পর্যন্ত ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অথচ সামাজিক মাধ্যমে বারবার ছড়ানো হচ্ছে ভুয়া তথ্য।

প্রশ্ন ফাঁস বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার বাংলাদেশের পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন ১৯৮০ অনুযায়ী দণ্ডনীয়। এর আওতায় সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। এছাড়া ডিজিটাল মাধ্যমে প্রতারণা করলে ২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইনে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের প্রতারণার ফাঁদ থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীদের আরও সচেতন হতে হবে এবং পরীক্ষার প্রস্তুতির ওপর আস্থা রাখতে হবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও এই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

বিআরইউ