অস্থায়ী হল পাচ্ছে জবি, অবকাঠামোগত ‘বঞ্চনা’ থেকে তবে কি মিলবে মুক্তি?

জবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৫, ০৬:২৬ পিএম
অস্থায়ী হল পাচ্ছে জবি, অবকাঠামোগত ‘বঞ্চনা’ থেকে তবে কি মিলবে মুক্তি?

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আবাসন সংকটের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে কেরানীগঞ্জে ৭ একর জমিতে অস্থায়ী আবাসনের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের সাথে সম্প্রতি সাক্ষাৎকালে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস.এম.এ ফয়েজ।

এ বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় পরিকল্পিতভাবে পিছিয়ে পড়েছে। তবে এখন আমরা জবির শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছি। প্রথম দিকে দু'টি অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতে পারে। একই সঙ্গে বাজেট ও আবাসন ভাতার বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সাথে আলোচনা করে সমাধান করার চেষ্টা করব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রথমেই আমাদের দুইটি অস্থায়ী আবাসনের জন্য প্রজেক্ট বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে। যদি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিপর্যায়ের সঙ্গে একযোগে একটি বৈঠক আয়োজন করা যায়, তাহলে আমাদের অবকাঠামোগত সমস্যা সমাধানে বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।’

জবির শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে অভ্যন্তরীণ আবাসনের সংকটে ভুগছেন। পুরোনো ভবনগুলোর অবস্থা নাজুক, এবং সেখানকার পড়াশোনার পরিবেশ একেবারেই অযোগ্য। শিক্ষার্থীদের মাঝে এর ফলে এক ধরনের হতাশা সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে তাদের পাঠ্যচক্রের পাশাপাশি বসবাসের ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা প্রকট। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন দাবি উঠেছে, কিন্তু সেই দাবিগুলো খুব একটা আশার আলো দেখেনি।

এদিকে, ইউজিসি চেয়ারম্যানের ঘোষণায় কিছুটা হলেও আশার আলো দেখা যাচ্ছে। তবে, শিক্ষার্থীরা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নন যে, এই অস্থায়ী আবাসন উদ্যোগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার সমাধান হবে কিনা। যদিও শুরুতে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে কিছুটা স্বস্তি মিলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, কিন্তু স্থায়ী সমাধান না পেলে আরও বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হতে পারে।

এই প্রেক্ষাপটে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন, দীর্ঘ সময় ধরে অবকাঠামোগত সংকটের মধ্য দিয়ে জীবন কাটানোর পর, সত্যিই কি তাদের জন্য সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে? যদি অস্থায়ী আবাসন শিগগিরই বাস্তবায়িত হয়, তাহলে তা হয়তো সাময়িক স্বস্তি ফিরিয়ে আনবে। তবে, সবক্ষেত্রেই স্থায়ী সমাধান একমাত্র উপযুক্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে সম্ভব হবে।

বিআরইউ