ফলগাছের পাতায় পাতায় মধুমাসের মৃদু সুর, বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে পাকা জামরুল, কাঁঠাল আর আমের মাদকতা। প্রকৃতি যখন আপন রূপে বিভোর, তখন সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে রঙ ছড়িয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন—মৌসুমি ফল উৎসব ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি।
ফলের রস-গন্ধের আনন্দ ভাগাভাগির পাশাপাশি সবুজের সুবাস ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণবন্ত শিক্ষার্থী সাংবাদিক সংগঠন ‘গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস)’।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে গবিসাস কার্যালয়ে মৌসুমি ফল উৎসব এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ফল-ফুলের বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে গবিসাসের বার্ষিক কর্মসূচিগুলোর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, লিচু, লটকন, আমলকী, ড্রাগনফলসহ নানা স্বাদের ও রঙের মৌসুমি ফলের সমারোহে উৎসবটি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত।
এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শুভাকাঙ্ক্ষী ও গবিসাসের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উৎসব চলাকালে গবিসাস সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী, নৈশপ্রহরী এবং মাঠ কর্মীদের মাঝেও মৌসুমি ফল বিতরণ করেন।
কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিলুফার সুলতানা বলেন, “নিঃসন্দেহে গবিসাস একটি ব্যতিক্রমধর্মী ও সৃজনশীল সংগঠন, যা সবসময় নতুনত্বের পথে এগিয়ে চলেছে। প্রতিবছরের মতো এবারও মৌসুমি ফল উৎসব আয়োজন করে তারা একটি গর্বিত ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। ‘মধুমাস’ উদযাপন সবাইকে একসঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ করে দিয়েছে।”
ফল উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামের উপস্থিতিতে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ফল ও ফুলের গাছ রোপণের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, “গবিসাস প্রতিবছর যে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমাদের সবারই উচিত বেশি বেশি বৃক্ষ রোপণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং সবুজ পৃথিবী গড়ে তোলায় ভূমিকা রাখা। আমি আশা করি গবিসাস তাদের এই কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে।”
গবিসাসের সভাপতি সানজিদা জান্নাত পিংকি বলেন, “গবিসাস সবসময়ই শুধু সাংবাদিকতার চর্চা নয়, বরং সমাজ, পরিবেশ ও মূল্যবোধের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে সচেষ্ট। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই প্রতিবছরের মতো এবারও আয়োজন করেছি ‘মৌসুমি ফল উৎসব’ ও ‘বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি’। দেশীয় ফলের পুষ্টিগুণ ও সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণের বার্তাও ছড়িয়ে দিতে চেয়েছি আমরা। শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমাদের নতুন করে অনুপ্রাণিত করেছে।”
সব মিলিয়ে ফল উৎসব ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ছিল আনন্দঘন, শিক্ষনীয় এবং পরিবেশবান্ধব এক চমৎকার উদ্যোগ, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি ক্যাম্পাসকে আরও সবুজ ও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।
ইএইচ