বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হলের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। রোববার (২৩ জুন) এক লিখিত প্রস্তাবনায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রামী ইতিহাস, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে নামগুলো প্রস্তাব করে।
প্রস্তাবে বলা হয়, আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল কেবল বাসস্থান নয়, বরং তাদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পরিচয়গত স্মারক হিসেবে কাজ করে। তাই হলের নাম হওয়া উচিত ন্যায়, মর্যাদা ও গৌরবের প্রতীক। সেই বিবেচনায় ১৩, ১৫, ১০ ও ২১ নম্বর হলের জন্য চারটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
১৩ নম্বর ছাত্রী হলের জন্য প্রস্তাবিত নাম—‘শহীদ নাফিসা-রিয়া হল’। প্রস্তাবে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট 'লং মার্চ টু ঢাকা' কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন সাভারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাফিসা হোসেন মারওয়া। একই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জে র্যাব-পুলিশের নির্মম হামলায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয় ছয় বছরের শিশু রিয়া গোপ।
নবনির্মিত ১৫ নম্বর ছাত্রী হলের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে ‘শহীদ ফেলানি খাতুন হল’। ছাত্রসংসদের মতে, সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত ১৬ বছর বয়সী ফেলানির ঝুলন্ত মরদেহ ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আত্মমর্যাদার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
১০ নম্বর ছাত্র হলের জন্য প্রস্তাবিত নাম—‘শহীদ শ্রাবণ-আলিফ হল’। প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শ্রাবণ গাজী ও আলিফ আহমেদ সিয়াম ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির সম্মুখসারিতে থেকে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁদের নামে নামকরণই গণতন্ত্রের লড়াইয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণকে স্মরণীয় করে রাখবে।
এছাড়াও ২১ নম্বর ছাত্র হলের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে ‘শহীদ জিয়াউর রহমান হল’। ছাত্রসংসদের ভাষ্যে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর সেনানী এবং স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদানের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন।
ছাত্রসংসদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব নামকরণ শুধু শহীদদের স্মরণ নয়, বরং ফ্যাসিবাদ, ভারতীয় আধিপত্য ও স্বৈরতন্ত্রবিরোধী ছাত্ররাজনীতির এক প্রতীকী অবস্থান। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন এসব নাম প্রস্তাবনা আলোচনায় এনে শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরএস