যুক্তরাষ্ট্রের আইন লঙ্ঘন ও নির্ধারিত মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার অভিযোগে ৬ হাজারেরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
সংস্থাটি জানিয়েছে, এসব লঙ্ঘনের 'বড় অংশ' ছিল হামলা, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো (ডিইউআই), চুরি এবং 'সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন'।
এই পদক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর অংশ হিসেবে এসেছে।
যদিও পররাষ্ট্র দপ্তর স্পষ্ট করে জানায়নি 'সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন' বলতে তারা কী বোঝাচ্ছে, তবে ট্রাম্প প্রশাসন কিছু শিক্ষার্থীকে লক্ষ্য করেছে যারা ফিলিস্তিনের সমর্থনে প্রতিবাদ করেছিল। প্রশাসনের দাবি, এরা 'ইহুদিবিদ্বেষী আচরণ' করেছে।
৬ হাজার শিক্ষার্থী ভিসার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ভিসা বাতিল করা হয়েছে কারণ ভিসাধারীরা আইন ভঙ্গ করেছে বলে দপ্তরের ব্যাখ্যা।
এ বছরের শুরুর দিকে ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা সাক্ষাৎকারের সময়সূচি স্থগিত করেছিল। জুনে পুনরায় সাক্ষাৎকার শুরু হলে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, সকল আবেদনকারীকে বাড়তি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলো প্রকাশ করতে হবে।
তারা জানায়, আবেদনকারীদের সামাজিক মাধ্যম খতিয়ে দেখা হবে 'মার্কিন নাগরিক, সংস্কৃতি, সরকার, প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠাকালীন নীতির প্রতি কোনো ধরনের শত্রুতার ইঙ্গিত আছে কি না'।
পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের আরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এমন আবেদনকারীদের শনাক্ত করতে যারা 'ঘোষিত বিদেশি সন্ত্রাসীদের পক্ষে প্রচার চালায়, সহায়তা করে, অথবা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে; কিংবা বেআইনি ইহুদিবিদ্বেষী হয়রানি বা সহিংসতার সঙ্গে জড়িত থাকে'।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও মে মাসে আইনপ্রণেতাদের বলেন, জানুয়ারি থেকে 'হাজার হাজার' শিক্ষার্থী ভিসা বাতিল করা হয়েছে বলে তিনি অনুমান করছেন।
তিনি বলেন, আমি সর্বশেষ সংখ্যা জানি না, তবে আমাদের আরও কাজ বাকি আছে। যারা অতিথি হিসেবে এখানে এসেছে এবং আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অশান্ত করছে, তাদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া আমরা চালিয়ে যাব।'
ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্প প্রশাসনের এই শিক্ষার্থী ভিসা বাতিলের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা একে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার ওপর আঘাত বলে অভিহিত করেছে।
ওপেন ডোর্স নামের বিদেশি শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহকারী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজগুলোতে ২১০টিরও বেশি দেশের ১১ লাখের বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল।
জেএইচআর