নিজের ঘরে অন্য কেউ মানুষের ভেতর মানুষ যখনই মরে যায় তখন চোখের পর্দা অন্তর্দৃষ্টি কেড়ে নেয় জাগতিক রঙের রঙিন ছবি জ্ঞানে বা বিজ্ঞানে
যতই শরীরে আঁকা হোক শিরা বা উপশিরায় যতই প্রবাহিত হোক জাগতিক বোধ তবুও অন্তর্দৃষ্টি খসে যায় বিবেকের আবরণে ভেতর বিবেক মনুষ্যত্ব আবরণে ভেতরের মনুষ্যত্ব মরে যায় কিংবা বেঁচে থাকে গভীর শীতনিদ্রার অবচেতনের ঘরে বুকের ভেতর শৈশবের শিশু মরে গেলে কৈশোরের দুরন্ত ঘোড়াটা মরে গেলে যৌবনের ফুসফুসে যদি জমে যায় জং ধরা দীর্ঘশ্বাস তখন ভেতর মানুষটার ভেতরে অন্য কেউ অন্তর্দৃষ্টি শূন্য মাটির শরীর যে মাটিতে ফুল নেই, গন্ধ নেই আমি আমি প্রাণ নেই | দীর্ঘশ্বাস কী এক ধূসর দীর্ঘশ্বাস— জড়িয়ে ধরেছে অন্তর্মুখী টানে যেন ব্ল্যাকহোল, ছায়াপথে হেঁটে হেঁটে গিলে খায়— নক্ষত্র সকল, আলোবীজ থেকে অঙ্কুরিত জোছনা কুসুম
কী এক আজব দীর্ঘশ্বাস উপহার দিলে! জীবনের ভরকেন্দ্রে অসহ্য পীড়ন বিকৃত করেছে বসন্তের মুখ থেঁতলে দিয়েছে কুমারী ফুলের ঘ্রাণ আয়ুপথে রোপণ করেছে—সারি সারি হেমলক ধ্রুপদী সমুদ্রে ঢেলে দিয়েছে সমস্ত প্রাণ কী এক চুম্বক দীর্ঘশ্বাস—দিয়েছ আমায় টেনে নিচ্ছে সবুজের সব রক্ত কেড়ে নিচ্ছে আকাশের স্বাদ ব্ল্যাকহোল নাভিমূলে—চোখ রেখে বোধের হাবল দূরবীনে দেখেছি সেসব ঘূণে কাটা স্বার্থের প্রণয়, ভালোবাসা... |
কোথাও দাঁড়ালে গোলাপ কলিতে আর ফুটলো না বাকি পথ... কোথাও দাঁড়ালে এক শুষ্ক নদী কাছে আসে প্রভুভক্ত কুকুরের মতো লেজ নেড়ে পাশে বসে নদীর ছায়ায় নিচে উত্তপ্ত ধূসর বালুচর
জল ও জীবন সবুজ নদীর পাশে হাঁটে যেমন হেঁটেছ তুমি প্রেমে ও অপ্রেমে কারা যেন আকাশটা খাঁচাবন্দি করে রাখে কারা? পাখিদের সমস্ত উড়াল কেড়ে নেয় নদীর যৌবন চুষে— সবুজের খিলখিল হাসি কেড়ে নেয়! চেয়েছি সবুজ দূর্বা হতে—কোনো মেঠোপথে, মাঠে গ্রামীণ বাতাসে দোল খাওয়া শস্যের ভেতরে অথবা বসন্তে কোনো বুনো ভাঁটফুল নিচে... তবু কারা যেন পথে ঢালে হিংসার আগুন অশোকের তরবারি, বারুদ, পাথর, বোমা বুকপকেটের ভাঁজে রাখে সাহারার দীর্ঘশ্বাস অথচ চেয়েছি মাটির খুব কাছাকাছি— নরম-সবুজ পাতা, সবুজ নরম কাণ্ডে দূর্বা হতে... | একটা বিষণ্ন সন্ধ্যা মাঝে মাঝে হুটহাট একটা বিষণ্ন সন্ধ্যা— একাকিত্বের উঠোনে অযাচিত এসে যায় নীরবতা খুঁড়ে খুঁড়ে লুকানো সিন্ধুকে— বেদনার পাণ্ডুলিপি খুঁজে আনে
ঠিকঠাক আসকারা পেলে কাছে আসে মৌনতার দহলিজে বসে মুখোমুখি— পাঠ করে পাণ্ডুলিপি; তখন যাপিত চিৎকারের নীল রক্তে লেখা— বর্ণ বেয়ে টুপটাপ ঝরে পড়ে বিস্ময় কোরাস মাঝে মাঝে কোন পৃষ্ঠা ওল্টাতেই ঝরে পড়ে তোমার শুকনো কয়েকটা চুমু চুমুর ভেতরে মৃত প্রজাপতি তারপর... তোমার ছায়ার হিসহিস ফণা একেকটা দিনের আয়ুকে গিলে ফেলে একাকিত্বের উঠোনে পাণ্ডুলিপি পড়ে যায় একটা বিষণ্ন সন্ধ্যা। |