রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে প্রবেশ করে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন জুলাই আন্দোলনে দৃষ্টিশক্তি হারানো চার যুবক।
পুনর্বাসন ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে রোববার দুপুরে চলমান এক বৈঠকের সময় তারা বিষপান করেন।
আত্মহত্যার চেষ্টাকারীরা হলেন—শিমুল, মারুফ, সাগর এবং আখতার হোসেন (আবু তাহের)।
পরে দ্রুত তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল খায়ের গণমাধ্যমকে জানান, “জুলাই ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সঙ্গে বৈঠক চলাকালে চার যুবক আমাদের কক্ষে প্রবেশ করেন। সিইও তাদের অপেক্ষা করতে বললে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানেই পূর্বপ্রস্তুত বিষপান করেন।”
তিনি বলেন, “জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো এই আহতরা অভিযোগ করেছেন যে, দীর্ঘ নয় মাসেও সরকারের পক্ষ থেকে তাদের উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।”
ডা. খায়ের আরও বলেন, “আমরা তাদের মানসিক অবস্থা বুঝতে পারছি। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং বারবার সে কথা আমাদের জানিয়েছেন। চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি ছিল না। এমনকি সরকারের সহায়তায় তাদের মধ্যে দুজনকে সিঙ্গাপুরেও পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু চক্ষুগুলিতে গুলির গুরুতর আঘাতের কারণে তাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।”
তিনি জানান, “তারা দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকলেও বর্তমানে চিকিৎসাসংক্রান্ত কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু বাড়ি ফিরতেও তারা ভয় পাচ্ছেন। তাদের একজনের চাঁদপুরের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, যা তাদের মানসিকভাবে আরও বিপর্যস্ত করে তুলেছে।”
পরিচালকের মতে, মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ও দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তা থেকেই তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে চেয়েছিলেন।
রাত ৮টার দিকে শেরেবাংলা নগর থানার ডিউটি অফিসার এসআই অমৃতা দত্ত বলেন, “আমরা এখনো বিষয়টি সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক খবর পাইনি। বিস্তারিত তথ্য হাতে আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় আহতদের দ্রুত পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইএইচ