কৃষি সচিব

পাট চাষে বাংলাদেশে সম্ভাবনার এখনও বিশাল সুযোগ রয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২৫, ০৫:৫৮ পিএম
পাট চাষে বাংলাদেশে সম্ভাবনার এখনও বিশাল সুযোগ রয়েছে

পাট চাষে বাংলাদেশে সম্ভাবনার এখনও বিশাল সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। আজ বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) এর কৃষি উইং কর্তৃক আয়োজিত “বার্ষিক অভ্যন্তরীণ গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা-২০২৫” অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

২০২৫-২৬ অর্থবছরে পাট চাষের জন্য জমির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭.০৫ লক্ষ হেক্টর। এ জমিতে চাষাবাদের জন্য প্রয়োজন হবে আনুমানিক ৫০০০-৬০০০ টন পাট বীজ। বর্তমানে বাংলাদেশে বছরে গড়ে ১৫ লক্ষ মেট্রিক টন কাঁচা পাট, ৩০ লক্ষ মেট্রিক টন পাটকাঠি এবং ৬ লক্ষ মেট্রিক টন চারকোল উৎপাদিত হচ্ছে বলে কর্মশালায় জানানো হয়।

কৃষি সচিব বলেন, “পাট নিয়ে অনেক কিছু করার আছে, পাটের সম্ভাবনা কোনোদিন শেষ হবে না। শুধু দেশের ভেতরে নয়, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা পাট নিয়ে অন্যান্য দেশ কীভাবে কাজ করছে, তার ওপরেও আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সেক্টর এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান একত্রিত হয়ে কাজ করলে পাটের গবেষণা আরও গতিশীল হবে। সীমিত জমিতে কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায় তা নিয়েও গবেষণা প্রয়োজন।”

“পাট কেবল অর্থকরী ফসল নয়, এটি আমাদের গর্ব ও পরিচয়ের প্রতীক,” বলেন কৃষি সচিব। তিনি জানান, “পৃথিবীর অনেক দেশ যেমন কিউবা বাংলাদেশের পাট আমদানি করে কারখানা গড়ে তুলেছে। জলবায়ু উপযোগিতার কারণে পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ এক বিশেষ অবস্থানে রয়েছে।”

সভাপতির বক্তব্যে বিজেআরআই’র মহাপরিচালক ড. নার্গীস আক্তার বলেন, “পাট আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সোনালি অধ্যায়। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত বিজেআরআই মোট ৫৭টি জাত, ২২৩টি কৃষি প্রযুক্তি এবং ৬৯টি শিল্প ও কারিগরি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।”

তিনি জানান, “পাট কৃষিজাত পণ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় চাষিরা কৃষিঋণের মতো পাটঋণসহ অন্যান্য সুবিধা পাচ্ছে। চারকোল রপ্তানিকারকরা সরকার থেকে ২০% নগদ প্রণোদনা পাচ্ছেন। দেশে বর্তমানে প্রায় ৫০টি চারকোল কারখানা রয়েছে, যদিও এর কিছু বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।”

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা অনুবিভাগ) মো. আবু জুবাইর হোসেন বাবলু, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আব্দুল লতিফ।

স্বাগত বক্তব্য দেন বিজেআরআই-এর প্রজনন বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম মোস্তফা এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেনোম গবেষণা কেন্দ্রের সমন্বয়ক ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস. এম. মাহবুব আলী।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল আমিন, কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক মো. মসীহুর রহমান, জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমির মহাপরিচালক মো. সাইফুল আজম খান, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মো. লুৎফর রহমান ও ড. মো. মোকতার হোসেন, বিজেআরআই-এর পরিচালকগণসহ কৃষি খাতের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং কৃষক প্রতিনিধিরা।

আরএস