তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত ৭নং জোনের প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৩, ০৮:৪৮ পিএম
তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত ৭নং জোনের প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত

জামিয়া কাসিমিয়া আশরাফুল উলূম ঢাকা মাদরাসা মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ ৭নং জোন ঢাকা- সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের উদ্যোগে রোববার (১৩ আগষ্ট)  প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন ৭নং জোনের সভাপতি মাওলানা আলী আজম।

প্রধান অতিথি হিসেবে সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি খতিবে বাঙ্গাল আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, দেশের কাদিয়ানী সমস্যার স্থায়ী সমাধান জরুরি। এই সমস্যার একমাত্র স্থায়ী সমাধান হচ্ছে কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা। তারা অমুসলিম সংখ্যালঘু হিসেবে নিজ ধর্ম পালন করুক। এতে আমাদের বিন্দুমাত্র সমস্যা নেই। কিন্তু খতমে নবুওয়াতকে অস্বীকার করে এবং মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে নবী মেনে এদেশে মুসলিম পরিচয়ে তারা বসবাস করবে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে খতমে নবুওয়ত আন্দোলন বেগবান করতে এক দফা নিয়ে মাঠে নামতে হবে। এর ফলে হয়তো কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা হবে নয়তো আমরা শাহাদাত বরণ করবো। এই আন্দোলন সফলভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য দেশের খতমে নবুওয়তের সকল সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।

প্রধান আলোচক হিসেবে সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, খতমে নবুওয়ত আন্দোলন এমন একটি ইবাদত। যার অস্তিত্ব না থাকলে কুরআন-হাদীস, নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত, ফেৎরা, সদকা সহ ইসলামের কোনো বিধিবিধান তথা পুরো শরীয়তের অস্তিত্ব থাকে না। মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সা:-এর জীবদ্দশায় যতগুলো গাযওয়াহ এবং সারিয়াহ সংঘটিত হয়েছে তাতে ১৫৯ জন সাহাবী শাহাদাত বরণ করেছিলেন। কিন্তু খতমে নবুওয়ত হেফাজতের জন্য মুসাইলামাতুল কাযযাবের বিরুদ্ধে এক ইয়ামামার যুদ্ধেই ১২০০ সাহাবী শাহাদাত বরণ করেছিলেন। সাহাবায়ে কেরামদের এই ত্যাগ কুরবানির ঘটনায় খতমে নবুওয়ত হেফাজত করা কতটা জরুরি তা স্পষ্ট হয়ে যায়। খতমে নবুওয়তের কাজ আরো মজবুত করার লক্ষে রাষ্ট্রীয় সকল পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের নিকট দাওয়াতী পয়গাম পৌঁছাতে হবে। এ সময় তিনি কেন্দ্রের দিকনির্দেশনা মেনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য ৭নং জোনের দায়িত্বশীলদের নিকট উদাত্ত আহ্বান জানান।

সভায় মুফতী আলী আকরাম, মুফতী মাহফুজ হায়দার ও মাওলানা মাহমুদ আল হাবিবের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, জামিয়া খাতামুন নাবিয়্যিন মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আশিকুর রহমান কাসেমী, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুফতী সাঈদ নূর, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আশিকুল্লাহ, প্রচার সম্পাদক মাওলানা রাশেদ বিন নূর, ঢাকা ৭নং জোন উপদেষ্টা মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানি, উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুল্লাহ, মুফতী আবুল হুসাইন খাঁন, মুফতী সানাউল্লাহ, মুফতী সালাহ উদ্দীন, মাওলানা আব্দুল মান্নান পাটওয়ারী, মাওলানা আলী আকবর, মাওলানা দ্বীন মুহাম্মদ, মাওলানা আলী আশরাফ তৈয়ব, ক্বারী জামাল উদ্দীন, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মুফতী মাহবুব গুলজার, মাওলানা নাজমুল হাসান বিন নূর, মাওলানা আমিনুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা মাহবুবুর রহমান নবাবগঞ্জী, মাওলানা শাহেদ জাহেরি, মাওলানা মুহিউদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ ফারুক হুসাইন, মাওলানা আহসান মাহবুব, মুফতী সোহাইল আহমাদ, মুফতী আব্দুর রহমান সিরাজী, মাওলানা ফয়জুল্লাহ, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক, মাওলানা আবু সাঈদ জেহাদি, মুফতি মোস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা আব্দুর রহমান নান্দেশ্বরী, মাওলানা ইদ্রিস আলী, মাওলানা শিব্বির আহমদ, মুফতী আশরাফ আলী, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মুফতি হাবিবুর রহমান, মাওঃ জুবায়ের দেপাশাই, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা বাহউদ্দীন, মাওলানস আবুল কাশেম, মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা ইউসুফ প্রমুখ।

এ সময় ঢাকা ৭নং জোন সেক্রেটারি মুফতী মাহফুজুর রহমান রাজধানী গুলিস্তানস্থ কাজী বশির মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় উলামা মাশায়েখ ও প্রতিনিধি সম্মেলন থেকে ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে ৫টি কর্মসূচি হাতে নেন।

১. আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ ৭নং জোন ঢাকা এর তিন থানা তথা- সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই এর কমিটি গঠন করা হবে।

২. আগামী অক্টোবর মাসে খতমে নবুওয়ত ও রদ্দে কাদিয়ানিয়্যাত শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হবে।

৩. আগামী নভেম্বর মাসে একযোগে সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের সকল মসজিদে খতমে নবুওয়ত ও রদ্দে কাদিয়ানিয়্যাতের উপর আলোচনা করার জন্য খতীবদের প্রতি আহবান জানিয়ে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

৪. আগামী ডিসেম্বর মাসে কাদিয়ানী সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষ দাওয়াতী কাফেলা প্রেরণ করা হবে।

৫. আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলন করা হবে।

পরিশেষে প্রধান অতিথি খতিবে বাঙ্গাল আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব দেশ-জাতীসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ‍‍`র কল্যাণ কামনায় এবং ডেঙ্গুর মহামারী ও দেশে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি ও উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চেয়ে দোয়া করেন।

আরএস