বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। একটি পক্ষ চায় অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচন, অন্যদিকে আরেকটি পক্ষ সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণায় অনড়। একদিকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বারবার বলে আসছে, তারা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার চায়। অন্যদিকে নবগঠিত রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল সিটেজেন পার্টি (এনসিপি) বলছে, প্রথমে নির্বাচন ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক কাঠামোর সংস্কার দরকার — তার পরই নির্বাচন।
বিএনপি নেতারা একাধিক বক্তব্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তারা আর দীর্ঘ অপেক্ষায় যেতে চান না। তারা চান, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং তার অধীনেই নির্বাচনের আয়োজন হোক। এই দাবিতে তারা মাঠেও আন্দোলন করছে।
অন্যদিকে এনসিপি’র দাবি, শুধুমাত্র সরকারের পরিবর্তনে সমস্যার সমাধান হবে না। তারা চায় একটি জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে রাষ্ট্র কাঠামো, বিচার ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কার। এনসিপি বলছে, এই সংস্কার ছাড়া যে নির্বাচনই হোক না কেন, তাতে জনগণের আস্থা ফিরবে না।
এই ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানকে কেন্দ্র করে ভোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন — তাহলে কি দেশের জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারে? আবার কেউ কেউ বলছেন, বিএনপি কি তাহলে এনসিপি’র সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আমার সংবাদকে বলছেন, ‘এই মুহূর্তে দুই পক্ষের মধ্যকার মতপার্থক্য গভীর। যদি একটি সর্বদলীয় সংলাপ না হয় বা একটি ঐকমত্য না গড়ে ওঠে, তাহলে ভোটের পথ দীর্ঘ হতে পারে।’ তারা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক মহল থেকেও চাপ আসছে — অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য।
এদিকে সাধারণ জনগণের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেকে মনে করছেন, রাজনীতির এই অনিশ্চয়তা দেশের অর্থনীতি, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে দুটি বড় প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে — নির্বাচন আগে, না সংস্কার আগে? আর এই দ্বিধা থেকেই তৈরি হয়েছে ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তার এক নতুন অধ্যায়। এখন দেখার বিষয়, এই অচলাবস্থা কত দ্রুত নিরসন হয়, আর বিএনপি ও এনসিপি একটি সম্মত পথে কত দ্রুত এগোতে পারে।
বিআরইউ