তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও আসন সীমানা নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও আসন সীমানা নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল ও নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছেছে। নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের চলমান কার্যক্রম এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আশু পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

বুধবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের অষ্টম দিনের বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় প্রতি আদমশুমারির পর ১০ বছরের মধ্যে আসন পুনর্র্নিধারণের জন্য সাংবিধানিক সংশোধনের প্রস্তাব এসেছে। এতে একটি কমিটি গঠনের বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আজকের আলোচ্যসূচিতে তিনটি বিষয় ছিল—নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের বিষয়। এর মধ্যে প্রথম দুইটি বিষয়ে সফলভাবে আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

অলি রীয়াজ বলেন, “নির্বাচন কমিশন নির্বাচন প্রক্রিয়া ও আসন নির্ধারণ নিয়ে কাজ করছে এবং সংবিধান সংস্কার কমিশন সুস্পষ্ট সুপারিশ প্রদান করেছে। দীর্ঘমেয়াদী ও স্থায়ী সমাধানের অংশ হিসেবে প্রতি আদমশুমারির অন্তত ১০ বছর পর সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের জন্য সংবিধানের ধারা ১১৯ অনুচ্ছেদ এক-এ আইনের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠনের বিধান সংযোজনের প্রস্তাব এসেছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই কমিটির কার্যপরিধি সুনির্দিষ্ট করতে নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণের আইন ২০২১ সংশোধন করা হয়েছে। এই বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।”

আশু পদক্ষেপ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, “ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে বিশেষায়িত একটি কমিটি গঠন করা হবে, যা বর্তমান কমিটির পরিবর্তে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করবে এবং এতে রাজনৈতিক দলের ঐক্যমত্য প্রতিফলিত হবে।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, “সব রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠায় অভিন্নমত পোষণ করেছে এবং সুনির্দিষ্ট ঐক্যমত্য তৈরি হয়েছে। এর গঠন, কাঠামো ও মেয়াদের ওপর আলোচনা হয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশন ৯০ দিনের এবং নির্বাচন কমিশন ১২০ দিনের মেয়াদ সুপারিশ করেছিল, যেটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং রাজনৈতিক দলগুলো এ বিষয়ে অনেকটা কাছাকাছি এসেছে।”

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো এই বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করেছে এবং আশা করছি চলতি জুলাই মাসের মধ্যে একটি ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করা সম্ভব হবে।”

ইএইচ