দারুণ জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৪, ০৯:৪৪ পিএম
দারুণ জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ

চলতি বছরের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নেমে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ২০৭ রান তাড়া করে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩ রানে হারে স্বাগতিকরা। 

সিরিজে টিকে থাকতে হলে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না টাইগারদের সামনে। হারলেই সিরিজ হাতছাড়া হয়ে যাবে স্বাগতিকদের। এমন সমীকরণে আজ (৬ মার্চ ) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে খেলতে নামে শান্তরা।

প্রথম ম্যাচের মতোই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বড় পুঁজি গড়ার লক্ষ্য ছিল শ্রীলঙ্কার। তবে তাদের কারও ইনিংসই বেশি বড় হতে দেননি বাংলাদেশি বোলাররা। ক্রিজে থিতু হতে যাওয়া প্রায় সব লঙ্কান ব্যাটারদেরই দ্রুত ফিরিয়ে সৌম্য-মেহেদীরা ব্রেকথ্রু দিয়েছেন। সঙ্গে ছিল শরিফুল ইসলামের সর্বনিম্ন ইকোনমির বোলিং। সবমিলিয়ে নির্ধারিত ওভারে লঙ্কানদের ১৬৫ রানের মধ্যে আটকে রাখে টাইগাররা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভাল শুরু এনে দেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। ১১ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটের জয়ে সিরিজে সমতা ফেরায় বাংলাদেশ।

১৬৬ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ভাল শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। ওপেনিং জুটি থেকে আসে ৬৮ রান। তাদের এই জুটি ভাঙেন পাথিরানা। ২২ বলে ২৬ রান করে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। এরপর খুব বেশিদূর যেতে পারেননি লিটন দাস। দলীয় ৮৩ রানে লিটনের উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। 
লিটনের উইকেটটাও নেন পাথিরানা। আউট হওয়ার আগে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৩৬ রান। এরপর বাকি পথটা কোনো অঘটন ছাড়াই পাড়ি দেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়। ১১ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অপরাজিত থাকেন ৩৮ বলে ৫৩ রানে। ২৫ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আগের ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় লঙ্কানরা। দলীয় ১ রানেই প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা। সেই ধাক্কা অবশ্য সামলেছেন কামিন্দু-কুশল মেন্ডিসরা। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৭ রান এসেছে কামিন্দুর ব্যাটে। এছাড়া কুশল ৩৬ ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ৩২ রান করেছেন। তাসকিনের বলে ৭ বল মোকাবিলায় কোনো রান না নেওয়া আভিষ্কা ফার্নন্দো ক্যাচ দেন তাসকিনের হাতেই।

এরপর দুই মেন্ডিস মিলে গড়েন ৬৬ রানের জুটি। দুজনেই চড়াও ছিলেন তাসকিন-মুস্তাফিজের ওপর। মাঝে সৌম্য সরকারকে আনতেই ব্রেকথ্রু পায় বাংলাদেশ। তার ডেলিভারিটা ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। লেংথ বলে ব্যাট চালিয়ে কট বিহাইন্ড হয়ে যান কুশল মেন্ডিস। কিছুটা বাড়তি বাউন্সেই এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান ধরা খেয়েছেন। ফেরার আগে কুশল মেন্ডিস ২২ বলে ৩৬ রান করেন। বড় জুটি ভাঙলেও ব্যাটিংয়ে ঝড় থামাননি কামিন্দু মেন্ডিস। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের বলে ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন।

পরের বলেই অবশ্য পয়েন্টে বল ঠেলে রান নিতে গিয়ে ফাঁদে পড়েন কামিন্দু। সেখানে থাকা শেখ মেহেদীর ছুড়ে দেওয়া বলে অনায়াসে স্টাম্প ভাঙেন রিশাদ। ১০ রানের ব্যবধানে টাইগার ভক্তরা দ্বিতীয়বার উল্লাসে মাতেন। রানআউট হন ২৭ বল মোকাবিলায় ৩৭ রান করা কামিন্দু। প্রথম ওভারে ১৫ রান দেওয়া মুস্তাফিজ দ্বিতীয় স্পেল করতে এসে সফল। ত্রয়োদশ ওভারে দ্বিতীয়বার বোলিংয়ে এসেই তিনি লেংথ ডেলিভারিতে সাদিরা সামারাবিক্রমাকে ফেরান। ১১ বল ৭ রান করা এই ব্যাটারের ফিরতি ক্যাচ নেন মুস্তাফিজ। এরপর আগ্রাসী ব্যাটিং করেছেন আগের ম্যাচেও লঙ্কানদের বড় পুঁজি এনে দেওয়া আসালাঙ্কা।

শেখ মেহেদীর এক ওভারে দুটি ছক্কা মারেন তিনি। এরপর কিছুটা কৌশল খাটিয়ে মেহেদী গতি বাড়িয়ে গুড লেংথে বল ফেললে লঙ্কান দলপতি বোল্ড হয়ে যান। ১৪ বলে তিনি ২৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন। শেষদিকে দাসুন শানাকা ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ৩৭ বলে তুলেছেন ৫৩ রান। তবে সেটি ঠিক শ্রীলঙ্কাকে এক লাফে পার করানোর মতো ছিল না। ২১ বলে ৩২ রান করেন ম্যাথিউস।

শানাকা ২০ রান করতে খেলেন ১৮ বল। নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তারা ১৬৫ রান সংগ্রহ করে। বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন, মেহেদী, মুস্তাফিজ ও সৌম্য। উইকেট না পেলেও সবচেয়ে মিতব্যয়ী বল করেছেন শরিফুল। ৪ ওভারে তিনি মাত্র ২০ রান খরচ করেন।
 

রিদয়/এইচআর