পাহাড়ে বরই চাষে স্বপ্ন বুনছেন সুশান্ত

মহুয়া জান্নাত মনি, রাঙ্গামাটি প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩, ০২:২১ এএম
পাহাড়ে বরই চাষে স্বপ্ন বুনছেন সুশান্ত

বরই চাষ করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন রাঙ্গামাটির সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা। কাপ্তাই হ্রদের পাশে সুশান্তের বরই বাগান। রাঙ্গামাটির সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নে সোনারাম কার্বারি পাড়ায় ১০ একর পাহাড়ি উঁচু-নিচু ঢালে তিনি এক হাজার বরই গাছ লাগিয়েছেন। গাছগুলোতে এখন থোকায় থোকায় ঝুলছে সুস্বাদু মিষ্টি বরই।

সরেজমিন দেখা যায়, সুশান্তের বরই বাগানে এরই মধ্যে পাকতে শুরু করেছে বল সুন্দরি, ভারত সুন্দরি, কাশ্মীরি আপেল বরই ও দেশি জাতের বরই। তার বাগানে আছে ২০ রকমের মিশ্র ফল। সুশান্তের বাড়ির আঙিনার চারপাশে বরই ছাড়াও আম, কাঁঠাল, লটকন, লিচু, আমলকি, পেঁপে, তেঁতুল, মাল্টা, লেবু, বেল, নারিকেল, সুপারি, রাম্বুটানসহ অন্য বারোমাসি ফল রয়েছে।

সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যার বরই বাগানে ১২ জনের অধিক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তার এ কাজে উৎসাহিত হয়ে অনেকেই এখন গড়ে তুলছেন মিশ্র ফলের বাগান। আপেল বরই (কুল), বল সুন্দরি বরইয়ে তাড়াতাড়ি ফলন আসায় এগুলো চাষে ঝুঁকছেন স্থানীয় কৃষকরা।

বাগানের কর্মচারী মঙ্গল মুনি চাকমা বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে সুশান্তের মিশ্র ফলের বাগানে কাজ করছি, দাদার এক হাজার বরই গাছের সবটিতে এবার ফলন এসেছে। বরইগুলো বেশ সুস্বাদু ও মিষ্টি। এসব ফলে আমরা কোনো প্রকার ওষুধ প্রয়োগ করি না। পাখিদের থেকে বাঁচাতে শুধু গাছের চারপাশে জাল ঘিরে দেয়া হয়েছে।

আর এক শ্রমিক সুকুমার চাকমা বলেন, বাগানের শুরু থেকেই এখানে কাজ করছেন। সুশান্তকে দেখে দেখে তিনিও নিজে একটা মিশ্র ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন। সে বাগানে আগামী বছর ফল আসতে পারে।

বাগান মালিক সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, বরই বাগান থেকে এ বছর সাড়ে ৫ লাখ টাকা আয়ের আশা করা হচ্ছে। বাজারে ১৫০ টাকা দরে ৫০ হাজার টাকার বরই বিক্রি করেছেন। বাগানে কাজ করা শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও অন্য খরচ বাদ দেয়ার পর এবার তিন লাখ টাকা লাভ হবে বলে জানান।

সুশান্ত আরও বলেন, ২০১৬ সালে বাড়ির আঙিনার পাশে মিশ্র ফলের বাগান শুরু করেন। প্রথম দিকে স্ত্রী সহযোগিতা করতেন। পরে শ্রমিক নিয়ে কাজ করতে হয়েছে।

তার এ বাগান থেকে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষাকালীনসহ সারা বছরই বিভিন্ন প্রকার ফল বিক্রি হয়।

উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি, তপন কুমার পাল, জানান, এবার রাঙ্গামাটি জেলায় ৭৭০ হেক্টর জমিতে বরই চাষ হয়েছে। বরই উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৬০০ টন।

তিনি বলেন, দেশি কুলের পাশাপাশি বরই বল সুন্দরি, ভারত সুন্দরি, আপেল কুলের বর্তমান বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং ইতোমধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আর বরইয়ের (কুল) বাড়তি মূল্য পাওয়ার কারণে কৃষকরা নতুন নতুন বাগান সৃজনের জন্য আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।