অভিনয় নিয়ে আলোচনা আমাকে মুগ্ধ করে

মো. সোহাগ বিশ্বাস প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২৩, ১২:২৩ এএম
অভিনয় নিয়ে আলোচনা আমাকে মুগ্ধ করে

এ সময়ের জনপ্রিয় টিভি অভিনয়শিল্পী সামিরা খান মাহি। বেশকিছু নাটকে অভিনয় করে পেয়েছেন দর্শকপ্রিয়তা। নাটকের পাশাপাশি এখন ওটিটিতেও পা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। কিছুদিন ছিলেন দেশের বাইরে। সম্প্রতি দেশে ফিরে শুরু করেছেন ঈদ নাটকের শুটিং। 

নতুন কাজ ও অন্যান্য বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন মো. সোহাগ বিশ্বাস

অনেক রাত পর্যন্ত শুটিং করছেন বুঝি?

—ঠিকই শুনেছেন। ভোর পর্যন্ত শুটিং হয়েছে। আমি আর তৌসিফ মাহবুব ‘ভূতের বাড়ি’ নামে একটি নাটকের শুটিং করেছি— যা আসছে ঈদে প্রচারিত হবে। এটি একটি ভৌতিক গল্প। শুটিংয়ে অনেক মজা হয়েছে। আবার কষ্টও হয়েছে।

মানে, কী ধরনের কষ্ট?

—চরিত্রের প্রয়োজনে আমাকে ভারী কনটাক্ট লেন্স পরতে হয়েছে। লেন্সের কারণে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হয়ে চোখ ফুলে গেছে। শুটিং থেকে ফেরার পরই ব্যথা হচ্ছিল। সকালে বেড়ে যায়। বিকালে একটু কমে। চিকিৎসক বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যা না হলে রিস্ক ফ্রি। তবে এসব লেন্স থেকে অনেক বড় ধরনের সমস্যাও হয়। আল্লাহ বাঁচিয়েছেন।

আপনার কী মনে হয় কনটাক্ট লেন্সে চোখের সৌন্দর্য বাড়ে?

—কেন জানি শুটিংয়ে কনটাক্ট লেন্সের অনেক চাহিদা থাকে। আমাদের শুনতে হয়, অন্য রকম লাগবে। শুরুতে ভালো লাগত। কিন্তু অনেক পরে বুঝতে পেরেছি কনটাক্ট লেন্স বা  চোখে যা-ই পরি না কেন, এটা তো ফেইক। যতই মানুষের কাছে অন্যরকম উপস্থাপন করি না কেন, স্বাভাবিক সৌন্দর্যই বেশি সুন্দর। এসব বোঝার পর লেন্স পরা বন্ধ করে দিয়েছি। এখন দেখি অনেক অভিনয়শিল্পীও কনটাক্ট লেন্স পরা বন্ধ করে দিয়েছেন। চরিত্রের চাহিদা না থাকলে নয়। আমাদের দেশে কনটাক্ট লেন্সগুলো খুবই কম দামি। এমনও আছে অনলাইনে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে! এগুলো বছরের পর বছর আমরা পরছিও। এগুলো চোখের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। প্রায়ই তো শুনি, লেন্সের কারণে কতজনের চোখে বড় ধরনের সমস্যা হয়েছে।

ঈদুল ফিতরে আপনার ৮টির মতো নাটক প্রচারিত হয়েছে। ঈদুল আজহায়ও কি সংখ্যা তেমন থাকবে?

—রোজার ঈদের পর সেভাবে সময় পাইনি। গত এক মাসের মধ্যে ২০ দিন তো লন্ডনেই ছিলাম। আসার পর কাজ করছি। এরই মধ্যে দুটি নাটকের কাজ করেছি। আর হয়তো পাঁচ থেকে ছয়টিতে কাজ করব। সবকটি তো অন এয়ারও হয় না। গত ঈদে এক ডজনের বেশি নাটকে অভিনয় করলেও অনেক আগের এবং ঈদের আগমুহূর্তে শুটিং করা মিলিয়ে আটটি প্রচারিত হয়েছে।

লন্ডনে গিয়েছিলেন কেন?

—আমার ভাই লন্ডনে থাকে। ওর সঙ্গে আমিও ভিসার আবেদন করেছিলাম। মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছিল, সে কারণে যাওয়া। যাওয়ার পর মনে হয় কিছু কাজের ব্যাপারে লিংক শেয়ার করতে পারি। মিটিং করতে পারি। এরপর অনেক জায়গায় মেইল করি, কিছু জায়গা থেকে রিপ্লাইও এসেছে।

শুনলাম সেখানে শুটিংও করলেন?

—না, শুটিং করিনি। ওখানকার একটা প্রোডাকশন একটি ওয়েব সিরিজ বানাচ্ছিল। আমাকে ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। বলেছিল, সিরিজটি নেটফ্লিক্সে যাবে। ওরাই আবার পরে নেটফ্লিক্সের জন্য অন্য একটা পরিকল্পনাও করছিল। বলছিল, অডিশন যেহেতু দেবে, এবারেরটায় ছোট্ট একটা চরিত্র করতে পার। কিন্তু করিনি। বলেছি, এখন নয়। তবে পরেরটায় যদি সিলেক্ট হই, তাহলে হয়তো দু-তিন মাসের মধ্যে আবার যাব। ওরা তো নাটক দেখে না। আমার চরকিতে মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ দেখিয়েছি।

চরকিতে মুক্তি পাওয়া ‘ওভার ট্রাম্প’ দিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়েবে যাত্রা শুরু। এই যাত্রা কেমন হয়েছে বলে মনে করছেন?

—যারাই দেখেছেন, আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। চরিত্রটা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং ছিল, একটু উনিশ-বিশ হলেই ভালগার লাগত। যাদের সঙ্গে আমার কখনো কাজও হয়নি, তারাও ইতিবাচক কথা বলেছেন। সব মিলিয়ে বলব— অসাধারণ অভিজ্ঞতা। নাটকে তো আমরা দুদিন আগে চিত্রনাট্য পাই। কিন্তু এই ওয়েব সিরিজে কাজের আগে প্রপারলি চিত্রনাট্য পাওয়া, মহড়া, অভিনয় নিয়ে আলোচনা আমাকে মুগ্ধ করে। আমি এই কাজটা করে অনেক অনুপ্রাণিত হয়েছি।

বছর দুয়েক ধরে শোনা যাচ্ছে  ‘চলচ্চিত্রে মাহি’। কোনো চলচ্চিত্রে আদৌ আপনাকে দেখা যাবে কি?

—বাংলাদেশে কেউ সিনেমায় চলে গেলে নাটকে অভিনয় তেমন করেন না। একটা মুভির অফার পেলাম, আর চলে গেলাম, পরে আর কিছুই ভাবলাম না। ফিন্যান্সিয়াল ব্যাপারও তো দেখতে হবে। আমি আগে চাকরি করতাম, অভিনয়ের কারণে চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই সিনেমায় কাজ শুরু করব। কারণ, সিনেমা একবার শুরু করলে আর ফিরে আসব না।