সাদুল্লাপুরে ডাকাতি-চুরির প্রতিবাদে মানববন্ধন

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ৭ নম্বর ইদিলপুর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় সম্প্রতি সংঘটিত একাধিক ডাকাতি, চুরি এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী একটি পরিবারের উপর প্রাণনাশের হুমকির ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার বিকেল ৩টার পর ইদিলপুর গ্রামের নতুন বাজার সংলগ্ন পাকা রাস্তায় ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনসাধারণের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ৩০ জুলাই (বুধবার) গভীর রাতে সংঘবদ্ধ একদল সশস্ত্র ডাকাত মাইক্রোবাসযোগে এসে ইদিলপুর ইউনিয়নের মৃত রাখাল চন্দ্র শীলের ছেলে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক মানিক চন্দ্র শীলের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের হাত-পা বেঁধে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে দুই ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালায়।

ডাকাতরা ওই সময় নগদ অর্থ, প্রায় ১০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান মালামাল, একটি ডিসকভার মোটরসাইকেল এবং কয়েকটি মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ডাকাত দলের সদস্যরা প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় তারা মামলার বিষয়ে এখনো দ্বিধায় আছেন। তবে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন—ইদিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহারুল হুদা, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, উপজেলা শিবির সভাপতি মোসফেকুর প্রামাণিক, ইউপি সদস্য মোকলেছুর রহমান, বাজার কমিটির সভাপতি হেলাল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, শিক্ষক রাজ্জাক মাস্টার ও আশরাফুল মাস্টার, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য রতন মাস্টার, শাহজাহান ঘটকসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষার্থী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

বক্তারা বলেন, এলাকায় একের পর এক চুরি, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। দিনদিন এসব ঘটনায় জনমনে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। ভুক্তভোগীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং হুমকির কারণে মামলা করতেও ভয় পাচ্ছেন।

তারা অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার, সুষ্ঠু তদন্ত এবং এলাকায় পুলিশ টহল জোরদার করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

উল্লেখ্য, ইদিলপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের অপরাধ দমন ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে জনমনে চরম উদ্বেগ দেখা দেবে বলে মন্তব্য করেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজ উদ্দিন খন্দকার বলেন, “ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে আমি নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযোগ না থাকলেও আমাদের তদন্ত ও অভিযানের কাজ চলমান রয়েছে। আশা করি, জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।”

ইএইচ