আসন্ন বাজেট

বাড়ছে মাতারবাড়ী ও মোংলার বরাদ্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মে ১১, ২০২৫, ০৮:৪০ এএম
বাড়ছে মাতারবাড়ী ও মোংলার বরাদ্দ

আসন্ন বাজেটে মাতারবাড়ী ও মোংলা বন্দর উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়াচ্ছে সরকার। বর্তমান সরকারের লক্ষ্য কক্সবাজারের মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর ও বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দরকে শিপিং হাবে পরিণত করা। আর সেজন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থ। ওই লক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আগামী অর্থবছরের বাজেটে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি বরাদ্দ চেয়েছে। তাতে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ প্রায় দ্বিগুণ এবং মোংলা বন্দরের উন্নয়নে বাজেটে চলতি অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৪৫ গুণ বেশি অর্থ বরাদ্দ দেয়া হতে পারে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকার দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে মাতারবাড়ীকে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ চট্টগ্রাম ও মোংলা ওই দুটি পুরানো বন্দরের পানির গভীরতা বড় সমুদ্রগামী জাহাজের জন্য যথেষ্ট নয়। সেজন্য সরকার মোংলা বন্দর পুনরুজ্জীবনের উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ বর্তমানে দুর্বল যোগাযোগব্যবস্থা ও লজিস্টিক সমস্যার কারণে বন্দরটি অপ্রতুলভাবে ব্যবহার হচ্ছে। মূলত মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আঞ্চলিক সংযোগ ও বৈদেশিক বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্য নেয়া হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৮০ শতাংশ বৈদেশিক বাণিজ্য চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

সূত্র জানায়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আসন্ন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) মোট ১০ হাজার ৪৩০ বিলিয়ন টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় ৪৮ শতাংশ বেশি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে সরকার এ খাতে ৭ হাজার ৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। মূলত মাতারবাড়ী ও মোংলা বন্দরের উন্নয়ন কাজে বড় অঙ্কের বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। কারণ এই দুটি বন্দর দেশের উন্নয়ন কর্মসূচিতে বিশেষ অগ্রাধিকার পাচ্ছে। মোংলা বন্দর বহু দশক ধরে সমস্যায় থাকায় সরকার সেটি পুনরুজ্জীবিত করতে চাচ্ছে। যাতে বাংলাদেশে বৈদেশিক বাণিজ্য ও আঞ্চলিক সংযোগ বিশেষ করে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সমপ্রসারিত করা যায়। আর মাতারবাড়ী বন্দর হবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অন্যতম অর্থনৈতিক লাইফলাইন। কারণ ওই বন্দরটি বৈশ্বিক পণ্য পরিবহনের আন্তর্জাতিক ট্রান্সপোর্ট হাবে পরিণত হবে।

মোংলা বন্দর উন্নয়নের বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। পাশাপাশি সরকার মোংলা বন্দর ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানের বৈদেশিক বাণিজ্যের অনুমতি দিয়েছে। পাশাপাশি ওই বন্দরের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে নতুন রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান সড়ক ও সেতু সমপ্রসারণ করা হচ্ছে।

সূত্র আরও জানায়, মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়নের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে ২ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। চলতি অর্থবছরের এডিপিতে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে ১ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। তাছাড়া মাতারবাড়ী থেকে কক্সবাজার শহরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী চলমান সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে ১ হাজার ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। আর মোংলা বন্দর উন্নয়নের জন্য মন্ত্রণালয় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে ৬১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে।

চলতি এডিপিতে ওই খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ১৩৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তাছাড়া পায়রা বন্দর উন্নয়নের জন্যও বেশি বরাদ্দ চেয়েছে মন্ত্রণালয়। পায়রা বন্দরের অবকাঠামো সুবিধা উন্নয়ন প্রকল্পে আগামী এডিপিতে ২৬০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। যেখানে চলতি অর্থবছর বরাদ্দ ছিল ৮৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।