Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

মিথ্যের উপর তৈরি সংসার কি সব ঝড় ঝাপটা সামলে বেঁচে থাকবে?

বিনোদন ডেস্ক

ডিসেম্বর ১৫, ২০২১, ০৮:৩০ এএম


মিথ্যের উপর তৈরি সংসার কি সব ঝড় ঝাপটা সামলে বেঁচে থাকবে?

সিনেমা সাধারণত দুই ধরণের হয়ে থাকে। এক হয় থ্রিলারে ভরা টুইস্ট অ্যান্ড টার্ন, আর এক হয় মনে প্রশান্তি আনা পারিবারিক গল্প কিংবা কমেডি। বলিউডে থ্রিলার জনরার সিনেমার তো অভাব নেই। দুই-তিন মাস পর পর একটি দুইটি থ্রিলার সিনেমা রিলিজ হয়েই থাকে। কিন্তু দুই নাম্বার ক্যাটাগরির মুভিতে বলিউড হয়ে যায় ফেল। কারণ সিনেমা এলেও ফ্যামিলি মুভিতে গল্প আর কমেডি সিনেমায় হাসি থাকে না। 

লাস্ট একটা কনটেন্টওয়ালা সিনেমা রিলিজ হয়েছিল সেটাও জুলাই মাসে। সেটা হল মিমি। তারপর.....তারপর আর কী কনটেন্টের খাজানা একবারে ফাঁকা। আবার শুরু হল অপেক্ষা। একটা ভালো সিনেমা দেখার। 

অবশেষে সেই আশায় আলো দেখালো বলিউড। একদমই নতুন কনসেপ্ট নিয়ে হাজির রাজকুমার।   সাধারণত যেসব দম্পতির সন্তান থাকে না তারা সন্তান দত্তক নেয়। কিন্তু কোনো এতিম সন্তান কী বাবা-মা দত্তক নিতে পারে?

কী নিশ্চয় ভাবছেন এও কী সম্ভব? এই অসম্ভবকেই পর্দায় সম্ভব করার প্রচেষ্টায় রয়েছেন রাজকুমার রাও। 

অনাথ ধ্রুব শিখর প্রেমে পড়ে অন্যা মেহরার। অন্যাও ভালোবাসে ধ্রুবকে। কিন্তু সমস্যা তৈরি করে অন্যার শর্ত। অন্যার একটাই শর্ত সে এমন একজনকে বিয়ে করবে যার  সুন্দর পরিবার এবং কিউট কুকুর আছে। আর এখানেই শুরু হয় গণ্ডগোল। প্রেমিকাকে বিয়ে করতে হলে থাকতে হবে বাবা মা। অথচ ধ্রুব বেচারা অনাথ। কিন্তু ভালোবাসা হারাতে চায় না ধ্রুব। 

কী করবে এই ভাবতে ভাবতে সে একটি পরিকল্পনা বানিয়ে ফেলে। সে ভাবে সে ভাড়া করবে বাবা-মা। তাই সে বেরিয়ে পড়ে মা-বাবার খোঁজে। 

অবশেষে ধ্রুবর দেখা হয় পুরুষোত্তম মেহরা এবং দীপ্তি ক্যাশপের সঙ্গে। যাদের সাথে ধ্রুবর ছোটবেলার যোগসংযোগ রয়েছে। 

কিন্তু সমস্যা এখানেই সমাধান নয়। কারণ পুরুষোত্তম আর দীপ্তির রয়েছে নিজস্ব ক্রাইসিস। তারা এক সময়ের সাবেক প্রেমিক-প্রেমিকা। তাই পুরুষোত্তম রাজি হলেও রাজি হয় না দীপ্তি। তবু হাল ছাড়ে না। অনেক কষ্টে দীপ্তিকে রাজি করিয়ে তাদের বাবা-মা সাজিয়ে হাজির করে অন্যার পরিবারের সামনে। 

তবে মিথ্যের উপর তৈরি ভালোবাসার সংসার কি সব ঝড় ঝাপটা সামলে বেঁচে থাকবে? নাকি সংসার শুরুর আগেই মিথ্যার ঝড়ে ভেঙে পড়বে সম্পর্ক?

এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে অভিষেক জৈন পরিচালিত হাম দো হামারে দো সিনেমায়। এই সিনেমায় মুখ্য ভুমিকায় অভিনয় করেছেন রাজকুমার রাও,কৃতী স্যানন,অপারশক্তি খুরানা,রত্না পাঠক শাহ এবং পরেশ রাওয়াল।

পরিচালক অভিষেক জৈন খুব ইন্টারেস্টিং গল্প বলেছেন। কিন্তু ধাক্কা খান স্ক্রিনপ্লে। গল্পের সঙ্গে তাল মিলিয়ে টানটান স্ক্রিনপ্লে বানাতে পারেননি প্রশান্ত ঝা। প্রথম ভাগ ভাল লাগলেও, দ্বিতীয়ভাগে বেশ একঘেয়ে হয়ে যায়। এমন একটা সময় আসে যখন দর্শকের মনে প্রশ্ন জাগতে বাধ্য, আরে বাবা এই পরিবার পরিবার মিথ্যে খেলাটার উপর থেকে কখন পর্দা উঠবে। 

আপনার ধৈর্য যখন শেষ সীমায়, তখন হঠাত্‌ যেন পরিচালকও সম্বিত ফিরে পান। তড়িঘড়ি শেষ করে ফেলেন ছবি। হ্যাঁ, হ্যাপি এন্ডিং ছিল মাস্ট।

পর্দায় ফের একবার নিজের সেরাটা দিয়েছেন রাজকুমার রাও। আরও একবার তিনি প্রমাণ করে দিলেন কেন অন্য সব তারকার থেকে তিনি জারা হটকে। কৃতি তার চরিত্রের সঙ্গে জাস্টিস করেছেন। পরেশ রাওয়াল এবং রত্না পাঠক শাহ, শুধু যে ভালো অভিনয় করেছেন তা নয়, গল্পের সীমিত গন্ডির বাইরে গিয়ে নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।

আসা যাক অপারশক্তি খুরানার কথায়। এই ছবি দেখতে দেখতে আপনার মনে হবে তাকে কোথাও যেন টাইপকাস্ট করে ফেলছেন পরিচালকরা। তিনিও কমফর্ট জোন থেকে বেরোতে চান না। হিরোর বেস্ট ফ্রেন্ডের বাইরে কিছু ভাবতেই যেন চান না। মনে দাগ কেটে যায় সাচিন জিগার-এর মিউজিক।

এবার প্রশ্ন হল ছবিটি কি দেখা যায়? নিশ্চয়ই যায়। বেশ কিছু মজার মুহূর্ত রয়েছে যা এই ছবির টেকআওয়ে পয়েন্ট। ছবি নিয়ে বিশেষ কমপ্লেনের জায়গাও হয়তো থাকত না, যদি প্রথম হাফের মতো দ্বিতীয় ভাগটিতেও একটু যত্নের ছোঁয়া থাকত।

আমারসংবাদ/এডি