ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ

রাইসুল ইসলাম লিটন, টাঙ্গাইল প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪, ০৩:০৫ পিএম

টাঙ্গাইলে মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপের ওপর সভাপতি গ্রুপের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় এক শিক্ষার্থীকে তিন তলার ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবীর।

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- বিএনবি বিভাগের সোহানুর রহমান সোহান, আইসিটি বিভাগের জয় ধর, কেমিস্ট্রি বিভাগের সজীব শেখ, অর্থনীতি বিভাগের সৌরভ, মিনার, নাঈম রাজ, আইসিটি বিভাগের সৌরভ, টেক্সটাইল বিভাগের তামীম।

এদের মধ্যে সোহানকে তিন তলার ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে ও বাকিদের দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে।

আহতদেরকে টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

আহতরা জানান, রাতের খাবার খেয়ে তারা তাদের হলের (জননেতা আব্দুল মান্নান হল) ছাদে বসে গল্প করছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মানিক শীলের অনুসারী সাফি মোরসালিন, আবিদ, রকি, ছাত্রদল সমর্থিত ইদ্রিস, রবিউল, রুবেল, বিশ্বজিৎ, অপুর নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসী দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এই হামলায় অন্তত ৭-৮ জন আহত হয়। এ সময় সোহানকে তিন তলার ছাদ থেকে ফেলা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আহত সোহানকে হাসপাতালে পাঠানো হলে ডাক্তার জানান, তার কোমর ভেঙে যায় ও দুই পায়ের হাড় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। পরে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ জননেতা আব্দুল মান্নান হলে তল্লাশি চালিয়ে ছাত্রলীগ মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মানিক শীল ও তার অনুসারীদের কক্ষ থেকে অন্তত ২০টি লোহার রড, দুইটি চাপাতি উদ্ধার করে। 

ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবীর জানান, এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর রাখতে সপ্তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি।

ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মানিক শীল ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানান।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এই বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি, মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে জননেতা আব্দুল মান্নান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আশরাফ হোসাইন তালুকদার জানান, ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইএইচ