‘জনশক্তি’ এনজিওর নামে কোটি টাকার প্রতারণা, র‍্যাবের জালে স্বামী-স্ত্রী

আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৫, ০৮:৫৩ পিএম

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ‘জনশক্তি’ নামের একটি ভুয়া এনজিও সহজ শর্তে ঋণ ও পেনশন স্কিম দেওয়ার প্রলোভনে সহস্রাধিক মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৮২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

প্রতারণার অভিযোগে এনজিওর কথিত মালিক সাজেদুল ইসলাম (৫০) এবং তার স্ত্রী ও শাখা ব্যবস্থাপক তাসলিমা আক্তারকে (৩৫) আটক করেছে র‍্যাব-১৪।

সাজেদুলের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের মাদারগঞ্জে এবং তাসলিমার বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চরপাড়া গ্রামে।

শুক্রবার রাতে র‍্যাব তাদের ময়মনসিংহ সদর ও ঈশ্বরগঞ্জ থেকে আটক করে ফুলবাড়িয়া থানায় হস্তান্তর করে। ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

র‍্যাব-১৪‍‍`র অধিনায়ক নয়মুল হাসান বলেন, “ভুয়া এনজিও খুলে স্বামী-স্ত্রী মিলে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করছিলেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, ‘জনশক্তি’ এনজিওতে মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করা ফারহানা খাতুন নামে এক নারী র‍্যাবের কাছে অভিযোগ করেন।

তিনি জানান, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এক বছরে চারজন মাঠকর্মীর মাধ্যমে প্রায় ১,৪০০ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৮২ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু ২৩ এপ্রিল থেকে এনজিওর ম্যানেজার তাসলিমা আক্তার অফিসে আসা বন্ধ করেন এবং তারা গা-ঢাকা দেন।

মাঠকর্মী ফারহানা খাতুন বলেন, “আমার অধীনে প্রায় ১,০০০ জনের মধ্যে ৫০০ জন ঋণের জন্য ৫ হাজার টাকা করে দিয়েছিলেন। এছাড়া অনেকেই বিভিন্ন মেয়াদের পেনশন স্কিমেও টাকা জমা দিয়েছিলেন। ম্যানেজার ও মালিক উধাও হওয়ায় বুঝতে পারি আমরা প্রতারণার শিকার হয়েছি।”

মাঠকর্মী মর্জিনা আক্তার ও শাহিদা আক্তার বলেন, “প্রথম থেকেই মানুষ সন্দেহ করত। তখন তাঁদের সরকারি লোগো দেখিয়ে বিশ্বাস করানো হতো। আমরা নিজেরাও প্রতারণার শিকার হয়েছি।”

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল ইসলাম জানান, “জনশক্তি নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে কোনো তথ্য ছিল না। বিষয়টি জানার পর স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।”

ইএইচ