বাগেরহাটের সাবেক সাংসদ শেখ হেলাল ও তার ছেলের নামে ২শ কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলা

বাগেরহাট প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৫, ০৮:২৮ পিএম

বাগেরহাট ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন ও তার ছেলে  বাগেরহাট ২ আসনের  সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২শ কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলা দায়ের হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মান্নান তালুকদার সোমবার (৫  মে) বাগেরহাট মডেল থানায় এই মামলা করেন।

মামলার অন্য আসামীরা হলেন, শেখ হেলালের ব্যক্তিগত সহকারী মো. ফিরোজুল ইসলাম, তন্ময়ের ব্যক্তিগত সহকারী এমএইচ শাহীন ও শেখ শহীদুল ইসলাম। এর মধ্যে শেখ শহীদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। মো. ফিরোজুল ইসলামের বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সদর উপজেলার মুক্ষাইট এলাকার বাসিন্দা। এমএইচ শাহীন ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা। শেখ তন্ময়ের ব্যক্তিগত সহকারী হওয়ার সুবাদে তিনি বাগেরহাটে বিভিন্নসময় প্রভাব বিস্তার করেছেন। শেখ শহীদুল ইসলাম বরিশালারের গোড়াচাঁদ দাস সড়কের বাসিন্দা।

৫ আগস্টের পর থেকে শেখ হেলাল, শেখ তন্ময়, মো. ফিরোজুল ইসলাম ও এমএইচ শাহীন আত্মগোপনের রয়েছেন। স্থানীয়দের ধারণা শেখ হেলাল ও শেখ তন্ময় দেশের বাইরে রয়েছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর রাতে শেখ হেলাল উদ্দীন, শেখ তন্ময়সহ পাঁচজন আব্দুল মান্নান তালুকদারের শহরের সরুই কার্যালয়ে গিয়ে দুইশত কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া, মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ মেরে ফেলার হুমকি দেয় আসামিরা। তখন মামলার বাদী আব্দুল মান্নান তালুকদার নিজের ব্যবসা রক্ষার স্বার্থে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহকের রক্ষিত টাকা থেকে সাত কোটি ত্রিশ লক্ষ টাকা আসামিদের হাতে তুলে দেন। তারা বাকি টাকা দ্রুত দিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তখনকার মত চলে যান।

পরে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি আসামিরা আবারও তার অফিসে এসে বাকি টাকা পরিশোধের জন্য হুমকি দেয়। তখন জীবন ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রক্ষায় মান্নান তালুকদার শেখ শহিদুল ইসলামের মাধ্যমে আসামিদের আরও ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা চাঁদা দেন। এই নিয়ে দুই দফায় আসামীরা আব্দুল মান্নান তালুকদারের কাছ থেকে ২০ কোটি টাকা চাঁদা নেয় বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।

আসামিরা ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় আগে তিনি থানা বা আদালতে মামলা করতে সাহস পাননি। এখন পরিবেশ তৈরি হওয়ায় মামলাটি করেছেন বলে জানান ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান তালুকদার।

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদ-উল-হাসান বলেন, আব্দুল মান্নান তালুকদারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পেনালকোডের ৩৮৬ ও ৩৮৭ ধারা অনুযায়ী মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এই মামলার এজাহারনামীয় ৩ নাম্বার আসামি মো. শহীদুল ইসলামকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানান ওসি।

আরএস