রাজশাহীর দুর্গাপুরে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) একটি ডিপ টিউবওয়েল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে হাসিবুর রহমান (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের হোজা অনন্তকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হাসিবুর রহমান ওই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ডিপ টিউবওয়েলটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি নেতা রেজাউল হক ও আবুল কাশেম গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। গত রমজান মাসে হাসিবুর একটি টিউবওয়েলে তালা লাগালে উত্তেজনা বাড়ে। এরপর একাধিকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ হলেও বিরোধ মেটেনি।
মঙ্গলবার হাসিবুর তার ফুফাতো ভাই শফিকুল ইসলামের জমি মাপতে গেলে বিএনপি নেতা ওয়াজেদ আলীর সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। পরদিন বুধবার সন্ধ্যায় নামাজের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আরও অন্তত ১০ জন আহত হন। এদের মধ্যে আব্দুর রহিম (৫০) ও ফারুক হোসেন (৪০) আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে রয়েছেন। আহতদের মধ্যে আরও আছেন আব্দুল হান্নান (৪৫), ওয়াজেদ আলী (৫০), সুনু (৪২), রাহিম (৪০) ও দুলু (৪৫)। সবাইকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের বোন কুলসুমা খাতুন জানান, "আমাদের চোখের সামনে ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। দীর্ঘদিন ধরে টিউবওয়েল নিয়ে বিরোধ চলছিল। মঙ্গলবার জমি মাপার সময় ঝগড়া হয়, আর বুধবার সন্ধ্যায় ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করে রেজাউল হকের লোকজন।"
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিপক্ষ রেজাউল হক ও শাহিনের বাড়ি ও দোকানে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রেজাউলের দোকানের সামনের অংশ ভাঙচুর করা হয় এবং তার বাড়ি থেকে একটি গরু গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। শাহিনের বাড়ির মূল ফটকেও ভাঙচুরের চিহ্ন দেখা গেছে। তবে অভিযুক্তদের কেউ বাড়িতে না থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুরুল হোদা জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে টহলে রয়েছেন। সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ইএইচ