টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও সীমান্তবর্তী নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে ময়মনসিংহে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা ও আকস্মিক বন্যা।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর, দোকানপাট ও সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
সিটি করপোরেশনের চরপাড়া, গাঙ্গিনারপাড়, ভাটিকাশর, বলাশপুর, বাঘমারা এলাকাসহ একাধিক এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ড্রেনেজ ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে পানি দীর্ঘসময় ধরে নিষ্কাশন হচ্ছে না, ফলে চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
ভারত সীমান্তঘেঁষা নেতাই নদীর উত্তর পাশে বাঁধ না থাকায় বিপদের মুখে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তৎপরতা না থাকায় জনমনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
এছাড়া জেলার ধোবাউড়া, হালুয়াঘাট, ফুলপুর ও সীমান্তঘেঁষা বিভিন্ন উপজেলায় নদ-নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে আশপাশের গ্রাম, বসতবাড়ি ও কৃষিজমি প্লাবিত করেছে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট, বিশুদ্ধ পানির অভাব এবং রোগবালাইয়ের আশঙ্কা।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন বলেন, “বাড়িতে পানি উঠে গেছে, রান্নার কোনো ব্যবস্থা নেই। ত্রাণের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তথ্য সংগ্রহ করে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের প্রস্তুতি সম্পন্ন রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা ও বন্যার ফলে ডায়রিয়া, পানিবাহিত রোগ ও চর্মরোগসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে। দ্রুত পানি নিষ্কাশন ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়া ময়মনসিংহ শহরের অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার সুস্পষ্ট প্রমাণ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইএইচ