শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার পদ্মা ও মেঘনার শাখা নদীগুলোতে চলছে বেপরোয়া বালু উত্তোলন। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ও অভিযান সত্ত্বেও স্থানীয় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট প্রতিদিন বাংলা ড্রেজার দিয়ে তোলা বালু বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এই ‘খোলামেলা’ লুটপাট। নদী চিরে বালু তোলার কারণে নদীভাঙন, পরিবেশ বিপর্যয় ও জনজীবনে নেমে এসেছে ভয়াবহ সংকট।
ভেদরগঞ্জের রামভদ্রপুর, উত্তর ও দক্ষিণ তারাবুনিয়া, চরসেনসাস, আরশিনগরসহ অন্তত ৫০টি স্পটে দিনে-রাতে চলছে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন। এসব স্থানে নদী হয়ে উঠেছে একেকটি ‘অবৈধ কারখানা’।
স্থানীয় জেলে আনিস ছৈয়াল বলেন, রাতে নদীতে নামা যায় না। শব্দ আর আলোয় নদীর চেহারা পাল্টে গেছে। মাছ কমে গেছে, নদীর তলা নষ্ট হয়ে গেছে।
আল-আমিন নামের এক বাসিন্দা জানান, গত বর্ষায় ড্রেজিংয়ের কারণে আমার উঠান নদীতে চলে গেছে। এখনও আতঙ্কে আছি।
এই অবাধ লুটপাটে প্রশাসনের নির্লিপ্ততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশবাদীরা। নদী পরিব্রাজক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান শিপন বলেন, এটা শুধু অবৈধ বালু উত্তোলন নয়, এটা রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট। এখনই বন্ধ না করলে কয়েক বছরের মধ্যে এই নদীর গতিপথই বদলে যাবে।
সংশ্লিষ্ট এক ড্রেজার মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সবাই জানে কীভাবে চলে। মাসে মাসে লোকজনকে ম্যানেজ করতে হয়। চাহিদা বেশি, নিয়ম ভাঙতে হয়।
ভেদরগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মোজাহেরুল হক বলেন, ‘আমরা একাধিক অভিযান চালিয়েছি। তবে অভিযানের খবর পেয়ে তারা ড্রেজার সরিয়ে ফেলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয়দের দাবি, অভিযান নয়, প্রয়োজন স্থায়ী সমাধান। নয়তো নদীর তীরে থাকা হাজারো পরিবারকে চিরতরে ঘরছাড়া হতে হবে।
বিআরইউ