জুলাই পুনর্জাগরণ ২০২৫ উপলক্ষে পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিবিপ্রবি) ‘জুলাই স্মরণ ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের প্রাঙ্গণে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে পিবিপ্রবির শিক্ষক, শিক্ষার্থী, জুলাই যোদ্ধা ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে আহতরা অংশগ্রহণ করেন এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও ভয়াবহতার স্মৃতিচারণ করেন। পরে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থনভিত্তিক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
পিবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ ৩৬ দিনের ত্যাগ ও সংগ্রামের গল্প। এ আন্দোলনে অংশ নেওয়া যোদ্ধাদের কাছ থেকেই আমরা সেই গল্প শুনছি।”
তিনি আরও বলেন, “আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের হাতে নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। রংপুরের আবু সাঈদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়, তা থামেনি—এ পর্যন্ত প্রায় ১,৪০০ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, যার মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। এমনকি বাসার ছাদে বা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষও হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে নিহত হন। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও এমন ঘটনা ঘটবে, তা অকল্পনীয়।”
আলোচনা পর্বে জুলাই আন্দোলনে গুলিতে চোখ হারানো পদ্মা সরকারি কলেজের ছাত্র মো. ছাকিন আহমেদ, হামলায় আহত পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্র ফাহাদ সিকদার, পিবিপ্রবির শিক্ষার্থী নাফিস আহনাফ, রিয়াজুস শামস ও মো. রিফাত হোসেন আন্দোলনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
তারা বলেন, “নির্বিচারে হামলা ও গুলির ঘটনায় জড়িতদের এবং তাদের নির্দেশদাতা ও মদদদাতাদের বিচার করতে হবে। একইসঙ্গে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখার দাবি জানাই।”
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইসরাত জাহান, পিবিপ্রবির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আকতার হোসেন, সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ পান্না লাল রায়, পিরোজপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শেখ রফিকুল ইসলাম, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ-আল-মাসুদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ইএইচ