মাইলস্টোনের সেই শিক্ষিকাকে দাফন করা হলো আশুগঞ্জে

আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়ার) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৩:০৬ পিএম

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত ইংরেজি শিক্ষিকা মাসুকা বেগম (নিপু) শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে, বোনের বাড়ির কবরস্থানে।

সোমবার (২২ জুলাই) ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার সময় ক্লাস নিচ্ছিলেন প্রাথমিক শাখার ইংরেজি মাধ্যমের এই শিক্ষক। দুর্ঘটনায় তাঁর শরীরের প্রায় ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে তাঁকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানেই রাত সাড়ে ১২টার দিকে মৃত্যুর কাছে হার মানেন মানুষ গড়ার এই কারিগর।

বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক সহকর্মীর কাছে মৃত্যুর আগে নিজের শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন মাসুকা। বলেছিলেন, মৃত্যুর পর যেন তাঁকে আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে—বড় বোনের শ্বশুরবাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) বিকেল ২টার দিকে তাঁর মরদেহ আশুগঞ্জে আনা হয়। বাদ আসর সোহাগপুর ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয় পারিবারিক কবরস্থানে।

মাসুকার বড় বোন পাঁপড়ি রহমান ও ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান বার্ন ইউনিট থেকে তাঁর মরদেহ গ্রহণ করেন। পরে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে গোসল শেষে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিহত মাসুকা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের চিলোকূট চৌধুরী বাড়ির সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। কয়েক বছর আগে তাঁদের মা মারা যাওয়ার পর থেকে মাসুকা বড় বোনের কাছেই থেকেছেন, পেয়েছেন মাতৃস্নেহ।

শিক্ষিকা মাসুকার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চিলোকূট ও সোহাগপুর গ্রামে। শোকে ভেঙে পড়েছেন তাঁর বাবা, ভাই, বোনসহ স্বজনরা।

মাসুকার কলেজ শিক্ষক অধ্যাপক আবু হানিফ বলেন, ‘মাসুকা ছিল অত্যন্ত মেধাবী, বিনয়ী ও আল্লাহভীরু মেয়ে। সে সবসময় ছাত্রীদের উৎসাহ দিত এবং নিজের দায়িত্ব পালন করত আন্তরিকতার সঙ্গে।’

বিআরইউ