মাগুরা ফায়ার সার্ভিস থেকে সরানো হলো মুর্শিদুল ইসলামকে

মিরাজ আহমেদ, মাগুরা প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৬:৪৫ পিএম

দায়িত্ব পালনে অনাগ্রহ, অফিসের আদেশ অমান্য এবং বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাগুরা ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত ফায়ারফাইটার মো. মুর্শিদুল ইসলামকে সরিয়ে তার মূল কর্মস্থল মহম্মদপুর ফায়ার স্টেশনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, (পিএন-৫০১৮৯০) নম্বরধারী মুর্শিদুল ইসলাম ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই উপ-সহকারী পরিচালকের মৌখিক নির্দেশে সাময়িকভাবে মাগুরা জেলা অফিসে যোগ দেন। সেখানে তিনি মূলত কম্পিউটার ও প্রশাসনিক দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। 
তবে দায়িত্ব পালনের সময় থেকেই তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ওঠে। 

অভিযোগ রয়েছে, সাবেক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী সাজ্জাদের সময় থেকেই মুর্শিদুল ইসলাম দপ্তরের স্টাফদের দিয়ে ভুয়া বিল উত্তোলন, আর্থিক লেনদেন এবং নানা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিশেষ করে ভুয়া চাহিদাপত্র তৈরি করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও দপ্তরের আর্থিক অনিয়মে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

মাগুরা, শ্রীপুর ও শালিখা উপজেলার অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ নাগরিক অভিযোগ করেছেন, “এই ফায়ারম্যান যদি সহজেই রক্ষা পেয়ে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে আবারও ফিরে এসে আগের দুর্নীতিগুলো চালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।” তারা মুর্শিদুল ইসলামকে মাগুরা থেকে দূরের কোনও উপজেলায় বদলির দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে মুর্শিদুল ইসলাম নিজেই শারীরিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে বারবার মৌখিক ও লিখিতভাবে মূল কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার আবেদন করে আসছিলেন। 

তিনি দাবি করেন, দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে কাজ করার কারণে তার চোখ ও মাথায় ব্যথার সমস্যা দেখা দিয়েছে এবং কিছু অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবশেষে তাকে পুনরায় মহম্মদপুর ফায়ার স্টেশনে সংযুক্ত করে। বিভাগীয় একাধিক কর্মকর্তা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে দপ্তরের আদেশ পালনের ক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াবে এবং দায়িত্ব পালনে অনাগ্রহ দেখালে তার বিরুদ্ধে যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে জেলা পর্যায়ের কয়েকজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী মনে করছেন, “শুধু সংযুক্তি নয়, এ ব্যক্তির বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। নইলে এ ধরনের অপচর্চা রোধ করা সম্ভব নয়।”

ইএইচ