গাজীপুরের সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে ময়মনসিংহের সাংবাদিক সমাজ।
শনিবার বিকেলে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, রাজনৈতিক নেতা, সামাজিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে নগরীর প্রধান সড়কে দীর্ঘ মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাহসী সাংবাদিক তুহিনকে হত্যা করে সত্য ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর নৃশংস আঘাত হানা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের দ্রুত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার সম্পন্ন করে ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি অতীতের সব সাংবাদিক হত্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানান তারা।
বক্তারা সতর্ক করে বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা বন্ধ না হলে দেশের গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। “তুহিন হত্যার মতো ঘটনা শুধু একজন ব্যক্তিকে নয়, সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকেও হত্যা করে,” মন্তব্য করেন তারা।
মানববন্ধনে সাংবাদিক মো. আরিফ রেওগীর অভিযোগ করেন, মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দিয়ে সরকারি সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তার নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে, অথচ এখনো ন্যায়বিচার পাননি।
বক্তারা আরও বলেন, “আজ শুধু তুহিন নয়, সত্যেরও মৃত্যু হয়েছে। সাহসী সাংবাদিকদের রক্ষায় সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, নইলে এ বাংলায় আর সাহসী সাংবাদিক জন্মাবে না।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন—সাপ্তাহিক বিশ্ব বাংলা ভিশনের দীপকচন্দ্র দে, এশিয়ান টিভির আলমগীর হোসেন, অপরাধ অনুসন্ধানের রাজন লাল সরকার, সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের ইমতিয়াজ আহমেদ তানসেন, সুবর্ণ বাংলার সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফ রেওগীর, সাংস্কৃতিক কর্মী অজিত বণিক, সিনিয়র সাংবাদিক মাইনুল ইসলাম ও গোলাম কিবরিয়া পলাশ, নারী সাংবাদিক সংঘ নাসাসের বাবলী আক্তার, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব ময়মনসিংহ মহানগরের সভাপতি আমিরুল ইসলাম রাব্বি, সাধারণ সম্পাদক সজীব রাজভর বিপিন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের তানজিল হোসেন মুনিমসহ অসংখ্য সাংবাদিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধন শেষে সাংবাদিক নেতারা ঘোষণা দেন—যদি দ্রুত বিচার ও ফাঁসি কার্যকর না হয়, তাহলে দেশের সাংবাদিক সমাজ আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। তারা ঐক্যবদ্ধভাবে তুহিন হত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
ইএইচ