দেবীগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধে হামলা-লুটপাট, আদালতে মামলা

দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০৩:০৪ পিএম

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে জমি ও চলাচলের রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধকে কেন্দ্র করে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা বর্তমানে পঞ্চগড়ের বিজ্ঞ আমলী আদালত (দেবীগঞ্জ) এ বিচারাধীন রয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের নাটকটোকা ডাকুয়াপাড়া গ্রামে। ভুক্তভোগী রুমি আক্তার (স্বামী. রুহুল আমিন) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুমি আক্তার ও রুহুল আমিনের বাড়ির সীমানা এবং আসামিদের চলাচলের রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিরোধ মীমাংসার জন্য ২০ জুন তারিখ নির্ধারিত থাকলেও তার আগেই, ১৫ জুন আসামি সইজ উদ্দিন চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে বাঁশের বেড়া দেন। এ সময় হাফিজ উদ্দিন বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।

সংঘর্ষে সইজ উদ্দিন, সুলতান, রবিউলসহ আরও অনেকে হাফিজ উদ্দিন ও রুবিনা আক্তারের ওপর হামলা চালায়। এতে তারা গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এরপর ১৬ জুন ভুক্তভোগী পরিবার চিকিৎসার জন্য বাইরে থাকাকালে আসামিরা রুমি আক্তার একা থাকার সুযোগে রুহুল আমিনের বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। তারা বাড়িঘর ভাঙচুর করে এবং গরু, ছাগল, চাল-ডাল, কাপড়-চোপড়, স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১২ লাখ ৭১ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় বলে দাবি করেছেন রুমি আক্তার।

এ ঘটনায় তিনি ৯ জুলাই আদালতে মামলা (নম্বর: সিআর ১৯৮) দায়ের করেন। মামলায় মোট ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে আসামি সইজ উদ্দিন ও সুলতান বলেন, “রুহুল আমিনের পরিবার পরিকল্পিতভাবে বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।”

অন্যদিকে বাদী রুমি আক্তার অভিযোগ করেন, “আসামিরা আমার সর্বস্ব লুটে নিয়ে আমাকে নিঃস্ব করেছে। এখন দুই শিশু সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ চাই।”

দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহেল রানা বলেন, “এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। মামলা দুটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। ভুক্তভোগী যদি কারো ভয়ে বাড়িতে থাকতে না পারেন, তবে লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।”

উল্লেখ্য, একই জমি সংক্রান্ত বিরোধে এর আগেও বাদশা মিয়া নামের একজন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় বর্তমানে রুহুল আমিন, রবিউল ইসলাম ও রুবিনা আক্তার জেলহাজতে রয়েছেন। হাফিজ উদ্দিন পলাতক আছেন।

ইএইচ