ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ফের সতর্ক করেছে রাশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে আমেরিকার হস্তক্ষেপ পরিবেশকে আরেকটি ভয়াবহ উত্তেজনার দিকে নিয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার বিবিসি আরও জানায়, এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া আলাদাভাবে দুই পক্ষকে সমর্থন করছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের কাছে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ এবং তাদের বিরুদ্ধে হামলার কথা ভাবলেও মস্কো তেহরানকে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবেই দেখে।
এই বছরের শুরুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের মধ্যে একটি কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর হয়। যেখানে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধিতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে দুই দেশ।
ইরান মস্কোকে ‘শাহেদ ড্রোন’ সরবরাহ করেছে যা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
ইরানে ইসরায়েলের এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা এই পদক্ষেপকে উস্কানিমূলক বলেও উল্লেখ করেছে।
এ ছাড়া বুধবার ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা না দেওয়ার জন্য আমেরিকাকেও সতর্ক করেছেন রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। তিনি বলেছিলেন, এটি নাটকীয়ভাবে পুরো পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করবে।
গত ১২ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।
হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ অন্তত কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে শুক্রবার রাতে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। ইরানের হামলার ভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ইহুদিবাদীরা। দুই দেশের মধ্যে সংঘাত এখনও চলমান রয়েছে।
ইএইচ