ইসরায়েলের গণহত্যায় সহায়তাকারী কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করল জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৫, ০৮:২০ পিএম

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ও পশ্চিম তীরে চলমান অপরাধযজ্ঞে ৬০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক কোম্পানি জড়িত। এমন তথ্য উঠে এসেছে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানিজের নতুন প্রতিবেদনে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটির বরাতে পার্সটুডে জানিয়েছে, আলবানিজ জানান, বিভিন্ন দেশের সরকার, বহু মানবাধিকারকর্মী, বিভিন্ন কোম্পানি এবং শিক্ষাবিদদের কাছ থেকে পাওয়া ২০০টিরও বেশি নথি ও তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে গাজায় চলমান পরিস্থিতিকে ‘গণহত্যামূলক অভিযান’ হিসেবে উল্লেখ করে আলবানিজ বলেন, এই সংঘাত অনেক আন্তর্জাতিক পক্ষের জন্য লাভজনক হয়ে উঠেছে বলেই এটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এই সংঘাতে সংশ্লিষ্টতা শুধুই রাজনৈতিক নয়, অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়াও এর একটি প্রধান চালিকা শক্তি।

প্রতিবেদনে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন ও ইতালির লিওনার্দোর নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়েছে, যাদের তৈরি অস্ত্র গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছে। এছাড়া, ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি ধ্বংসে ব্যবহৃত ভারী যন্ত্রপাতি সরবরাহের জন্য ক্যাটারপিলার ইনকর্পোরেটেড এবং এইচডি হুন্দাইয়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রযুক্তি খাতের বড় কোম্পানিগুলোর মধ্যেও ইসরায়েলকে সহায়তার প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন আলবানিজ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেট, অ্যামাজন, মাইক্রোসফট, আইবিএম এবং প্যালান্টির টেকনোলজিসের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো ক্লাউড কম্পিউটিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও নজরদারি প্রযুক্তি সরবরাহের মাধ্যমে ইসরায়েলি দমন-পীড়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

আলবানিজ এই কোম্পানিগুলোকে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে কোম্পানিগুলোর নির্বাহীদের বিরুদ্ধে বিচারের দাবি তুলেছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই কাউন্সিল থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই সংস্থা ইসরায়েলবিরোধী পক্ষপাতদুষ্ট।

প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশের পর মার্কিন সরকার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে বলেছে, যেন তিনি ফ্রান্সেসকা আলবানিজকে বরখাস্ত করেন এবং তার প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। বিশ্লেষকদের মতে, সত্য তুলে ধরার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

ইএইচ