‘মব’ সৃষ্টি করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে হেনস্তার মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের তিনজনকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্যাহ বুধবার বিকেলে শুনানি শেষে তাদের জামিনের আদেশ দেন।
জামিন পাওয়া তিনজন হলেন–ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের মোজাম্মেল হক ঢালী, উত্তরা পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ এবং একই থানার যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কাইয়ুম।
[318007]
‘জনগণের ভোট ছাড়া’ নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে গত রোববার সাবেক তিন নির্বাচন কমিশনের পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে বিএনপি।
মামলা হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর কথিত জনতা উত্তরার বাসা থেকে সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে আটক করে হেনস্তা করে।
আটকের সময় তারা নূরুল হুদার ওপর চড়াও হয়। বাসায় ঢুকে সাবেক সিইসিকে অপদস্থ করে। কেউ কেউ ফেইসবুকে লাইভও করেন।
এমন একটি ভিডিওতে দেখা যায় নূরুল হুদার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দিচ্ছেন এক ব্যক্তি। তার গেঞ্জির কলার ধরে রেখে বক্তব্য দিতে দেখা যায় ওই ব্যক্তিকে। এসময় ওই ব্যক্তির পাশে পুলিশের পোশাক পরা একজনকে দেখা যায়।
পরে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। সোমবার বিএনপির মামলায় নূরুল হুদাকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
এদিকে নূরুল হুদাকে অপদস্ত করার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ‘দায়ীদের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে বিবৃতি দেওয়া হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকেও।
ওই ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই সজীব হাসান মঙ্গলবার ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এর আগে সোমবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি দল উত্তরা এলাকা থেকে হানিফকে আটক করে।
মামলা হওয়ার আগে সোমবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি দল হানিফকে উত্তরা এলাকা থেকে আটক করে। মামলা দায়েরের পর তাতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
হানিফের পক্ষে তার আইনজীবী মঙ্গলবারই জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আদালত জামিন শুনানির দিন বুধবার ধার্য করেন।
এদিকে মোজাম্মেল ও কাইয়ুম এদিন আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। তাদের পক্ষে জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এনামুল হক।
শুনানিতে তিনি বলেন, “তারা নির্দোষ, নিরাপরাধ। ঘটনার সাথে কোনোভাবে জড়িত না। হয়রানি করতে তাদের মামলায় জড়িত করা হয়েছে। তারা ভিকটিমের নিরাপত্তার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। অন্যথায় বিক্ষুদ্ধ জনতার হাতে ভিকটিম মারাত্মক শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হতেন।
“দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তাদের মামলায় জড়িত করা হয়েছে। তারা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের প্রার্থনা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জামিনযোগ্য ধারার।”
হানিফের পক্ষে তার আইনজীবী আবদুল ফারুক বলেন, “এ আসামি সম্পূন্ন নির্দোষ। ঘটনার সাথে জড়িত না। ভিকটিমকে রক্ষা করতে সেখানে যান। ভিকটিমকে হেনস্থার সাথে জড়িত নন।”
শুনানি শেষে আদালত ৫০০ টাকা মুচলেকায় মামলার পরবর্তী তারিখ ২৮ জুলাই পর্যন্ত তাদের জামিনের মঞ্জুর করেন।
এ মামলার বাকি তিন আসামি হলেন– স্বেচ্ছাসেবক দল উত্তর মহানগরের সভাপতি ফরিদ, উত্তরা পশ্চিম থানার আহ্বায়ক সেলিম এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের তুরাগ থানার সভাপতি দুলাল।
আরএস