Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

একটি শক্তি শেখ হাসিনার সরকারকে নেমে টানানোর ষড়যন্ত্র করছে: এসএম কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ৮, ২০২১, ০৩:১০ পিএম


একটি শক্তি শেখ হাসিনার সরকারকে নেমে টানানোর ষড়যন্ত্র করছে: এসএম কামাল

আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম ভাইয়ের পরিবার কখনও বঙ্গবন্ধুর রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি জানিয়ে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেছেন, ৭৫’এ ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারের হত্যা হওয়ার পর ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী বঙ্গবন্ধু রক্তের উপর পা রেখে অনেক বড় হতে পারতেন। কিন্তু তিনি বঙ্গবন্ধুর রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। পিতার মতোই বিশ্বাসঘাতকতা করেনি মোহাম্মদ নাসিম। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি, বঙ্গবন্ধুর রক্ত সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে আশার পর মোহাম্মদ নাসিম তার পাশে থেকে আওয়ামী লীগকে সু-সংগঠিত করেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জননেত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়ে কখনোই প্রশ্ন করেননি। শেখ হাসিনার প্রতি মোহাম্মদ নাসিমের অবাধ বিশ্বাস ও আস্থা ছিলো। 

মঙ্গলবার (৮ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আব্দুস সালাম হলে প্রয়াত জননেতা মোহাম্মদ নাসিমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকাস্থ সিরাজগঞ্জ সাংবাদিক সমিতি এই স্মরণ সভার আয়োজন করে।

প্রয়াত নেতা মোহাম্মদ নাসিম একজন কর্মী বান্ধব নেতা ছিলেন উল্লেখ করে এসএম কামাল বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর মোহাম্মদ নাসিমের বাসায় প্রবেশ করা যেত না। শুধু সিরাজগঞ্জের লোক না, সারাদেশের নেতাকর্মীরা মোহাম্মদ নাসিমের কাছে ছুটে আসত। তিনি সবার কথা শুনতেন, সবার উপকার করার চেষ্টা করতেন।

মোহাম্মদ নাসিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এসএম কামাল বলেন, আমি যখন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটিতে ঢুকি, নির্বাহী কমিটির সভা চলছিল। নাসিম ভাই তখন জোটের ব্যাপারে কথা বলছেন, তিনি কামাল হোসেনের নাম বলছিলেন। নেত্রী তখন বলল, আমাদের কামাল হোসেনের দরকার, আমাদের ছোটদের কামাল হোসেন আছে, ওকে আপনার সঙ্গে দিচ্ছি। আমি সেই সময় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলাম।

এসএম কামাল আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নেয়ার পর, দেশে আসার পর সেই দুঃসময়ে মোহাম্মদ নাসিম জননেত্রীর পাশে থেকে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জননেত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে নিয়ে কোনসময় প্রশ্ন করেননি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ২০০১ সালের পর থেকে সারাদেশে ঘুরে ঘুরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, এরকম কেউ দাঁড়িয়েছেন কি না সন্দেহ?

এসএম কামাল অকুতোভয় নেতৃত্বের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, মোহাম্মদ নাসিম রাস্তায় থাকলে আমরা ভরসা পেতাম। মোহাম্মদ নাসিম রাজপথে থাকলে ভরসা পেতাম। মোহাম্মদ নাসিম কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা করেনি শেখ হাসিনার সাথে। আজীবন বাবা যেমন বঙ্গবন্ধুর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, মোহাম্মদ নাসিমও তেমনি বঙ্গবন্ধু তনয়ার নিজের জীবনের সমস্ত শ্রম মেধা বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করেছেন।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল কেমন ছিল সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন তুলে এসএম কামাল বলেন, আপনারা জানেন ১৮ জন সাংবাদিক খুন হয়েছিল। প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিকরা খুন হয়েছিল। সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরীরা কুষ্টিয়াতে একটি প্রতিবাদ সভা করতে গিয়ে রক্তাক্ত হতে হয়েছিল। 

এই সরকার সাংবাদিক বান্ধব সরকার দাবি করে তিনি বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছিল, একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। আমি নাম বলব না। তাই যারা বলেন দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করার জন্য নির্যাতিত হয়েছে, আমি বিশ্বাস করি না। পদ্মা সেতুর দুর্নীতি, প্রথম আলোর শিরোনাম ছিল মন্ত্রীর দুর্নীতির কারণে পদ্মা সেতু বন্ধ। 

কানাডার আদালতে মামলা হয়েছিল। কিন্তু তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। সরকার আর পদ্মা সেতু কিন্তু যেনতেন বিষয় না। সেই পদ্মা সেতুর দুর্নীতি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার পর সরকার কিন্তু ইচ্ছা করলে সেদিন প্রথম আলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত, কিন্তু করেনি। কারণ আমরা মনে করি সত্য বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ জাতির সামনে তুলে ধরবেন। আমরা রাজনৈতিক দল তার আলোকেই আমরা কাজ করবো বলে মনে করেন এসএম কামাল।

আজকে একটি ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে এসএম কামাল হোসেন বলেন, একটি শক্তি যারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন, যারা ষড়যন্ত্র করছে জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। কারণ উন্নয়ন অগ্রগতিতে বিশ্ব নেতৃত্ব প্রশংসা করছেন জননেত্রী শেখ হাসিনার। আর এই সময় একটি শক্তি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নেমে টানানোর চেষ্টা করছেন।

এই বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করেন? এই বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের দলে কে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, এক-এগারোতে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মাইনাস করার জন্য পত্রিকার অনেক মালিকরাও ছিল অনেক ব্যবসায়ী ছিল, অনেক রাজনীতিবিদ ছিল। সেই শক্তি আজকে ষড়যন্ত্র করছে। কারণ এক-এগারোতে বেগম খালেদা জিয়া মূল লক্ষ ছিল না, মূল লক্ষ ছিল শেখ হাসিনা। এ কারণে শেখ হাসিনাকে সবার আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল এই দেশটাকে যারা জঙ্গিবাদের দেশ বানিয়েছেন, দুর্নীতিবাজদের দেশ বানিয়েছেন, সন্ত্রাসীদের দেশ বানিয়েছেন, অকার্যকর দেশ বানিয়েছেন, যারা কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে তারা আজকে বিদেশে বসে অপপ্রচার করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, যারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মামুনুল হকদের সামনে রেখে তাণ্ডব করেছিলেন। সেই শক্তি নেপথ্যে থেকে যে সাংবাদিক বান্ধব সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা, সেই সরকারের বিরুদ্ধে যাতে আপনাদের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চেষ্টা না করে, সেই বিষয়ে সাংবাদিকরা খেয়াল রাখবেন।
ঢাকাস্থ সিরাজগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি তৈমুর ফারুক তুষারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রনির সঞ্চলনায় স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন-আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। 

স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. দিলীপ রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের কেষাধক্ষ শাহেদ চৌধরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ঢাকাস্থ সিরাজগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি শাহনেওয়াজ দুলাল, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মানিক লাল ঘোষ, শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম  সাধারণ সম্পাদক সজিদ রাসেল প্রমুখ।

আমারসংবাদ/আরআই/এআই