Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪,

আড্ডা-গানে ৯৪ ও ৯৬ ক্লাবের একদিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ১৬, ২০২০, ০১:১৫ পিএম


আড্ডা-গানে ৯৪ ও ৯৬ ক্লাবের একদিন

শুনশান নীরবতা ভাঙে কোলাহলে। বয়স যেখানে বাঁধ মানে উচ্ছাসে। এ যেন ফিরে যাওয়া সেই কিশোর-তারুণ্যে। গলা ছেড়ে গান, কাঁধেকাঁধ রেখে ছবি তোলা, স্মৃতি রোমন্থন করেই দিনটি কাটিয়েছেন তারা। এসএসসি ১৯৯৪ ও এইচএসসি ১৯৯৬ ব্যাচের সোস্যাল মিডিয়া ভিত্তিক গ্রুপ ৯৪ ও ৯৬ ক্লাবের প্রায় চার শতাধিক বন্ধুরা শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) ধানমন্ডি কনভেনশন সেন্টারে মিলিত হয়েছিল। আকাশি রঙের টি-শার্ট রং ছড়াচ্ছিল যেন পুরো কনভেনশন হল জুড়ে।

আয়োজকদের ভাষ্য- করোনা না থাকলে আরও অন্তত কয়েকগুণ বেশি বন্ধু জড়ো হতে পারতাম।

অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া নিগার সুলতানা খুবই উৎফুল্ল হয়ে বলেন, করোনার এই সময়টাতে ঘরে বন্দি থেকে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলাম। আজ একটা দিনে সেইসব অবসাদ ভুলে মনে হচ্ছে ফেলে আসা শৈশবে হারিয়ে গেলাম। বন্ধুত্ব যেখানে নেই কোন ক্লান্তি কিংবা অবসাদ। এখানেই শুধুই আনন্দ আর উৎসবে মেতে থাকা এক সম্পর্ক।

২০১৯ সালের ২৭ জুলাই শুরু হওয়া এই ক্লাবে ইতোমধ্যে প্রায় পাচ হাজারেরও বেশি মানুষ যুক্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে ৬৪ জেলা ও বিশ্বের অন্তত ৫টি দেশে প্রতিনিধি রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর গত বছর বিজয় দিবসে রাজধানীর লালবাগ এলাকায় একটি এতিমখানায় খাবার ও কম্বল বিতরণের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করে। এরপর সারাদেশে ছোটবড় অন্তত দশটি বন্ধু আড্ডার আয়োজন করে। করোনাকালে সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাড়ায় তারা।

উদ্যোক্তাদের লক্ষ্য এসএসসি ১৯৯৪ ও এইচএসসি ১৯৯৬ এর বন্ধুদের সবাইকে এক ছাতার নিচে যুক্ত করা। একসাথে পথচলা ও একেঅন্যেও সুখে দুঃখে পাশে দাঁড়ানো। সেইসাথে দেশের নাগরিক হিসেবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে পরিবর্তনের জন্য কাজ করবে।

এই আয়োজনের উদ্যোক্ত ঢাকা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সায়েম ইবনে ইসলাম অনিক। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে সাংগঠনিক কাজে আমার আসক্তি। ফাকা কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন করতাম। সেখান থেকেই মূলত ব্যাচের বন্ধুদের সম্মিলন ঘটাতে উদ্বুদ্ধ হই। গত বছর ২৭ জুলাই একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে বন্ধুদের জড়ো করি। আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করি ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিবসে রাজধানীর লালবাগ এলাকায় একটি এতিমখানায় শিশুদের মাঝে খাবার ও কম্বল বিতরণের মাধ্যমে। এরপর বিভিন্ন সময়ে বন্ধুরা সারাদেশের অন্তত ১০টি ইভেন্টে মিলিত হয়েছি। করোনাকালে ব্যাচের তরফ থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে। ইতোমধ্যে সারা দেশের ৬৪ জেলায়ও বিশ্বের অন্তত পাঁচটি দেশে আমাদের প্রতিনিধি রয়েছে।

অনিক বলেন, আজকের আয়োজনে অন্তত চার শতাধিক বন্ধু যুক্ত হয়েছে। ফেসবুক গ্রুপে ইতোমধ্যে প্রায় ৫ হাজার বন্ধু যুক্ত হয়েছে। এই সংগঠন নিয়ে আমাদের সবার অনেক স্বপ্ন ও পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমত এসএসসি ১৯৯৪ ও এইচএসসি ১৯৯৬ ব্যাচের প্রত্যেক বন্ধুকে একই প্লাটফর্মে নিয়ে আসা। এরমাধ্যমে একটা শক্ত বন্ধন তৈরি হবে। আমরা চাই নিজেরে মধ্যে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি হোক। আরেকটি টার্গেট হলো সামাজিক যে দায়বদ্ধতা আছে। দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব আমরা চেষ্টা করবো সামাজিকভাবে পালন করব। ব্যক্তিগতভাবে আমার ইচ্ছে সামাজিক কর্মকাণ্ড ও বিনোদনের মাধ্যমে একদিন ৯৪ ও ৯৬ ব্যাচ একটা ব্র্যান্ড হিসেবে দাঁড়াবে।

ঢাকা কলেজের এই শিক্ষার্থী ছাত্রজীবন থেকেই বেশ ভালো সংগঠক ছিলেন। ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।

আমারসংবাদ/কেএস