চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
নভেম্বর ২৭, ২০২০, ০২:৫৫ পিএম
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্কের জেরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ‘প্রতিহতের’ ঘোষণার মধ্যেই চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে অবস্থান করছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক।
শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) রাতে হাটহাজারী পার্বতী হাই স্কুল মাঠে ইসলামী সংগঠন আল আমিন সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিলে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে তার। তবে শেষপর্যন্ত তিনি বক্তব্য রাখবেন কিনা- কোনো সূত্র থেকেই সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান বলেন, আমি অসুস্থ, গত কয়েকদিন ধরে জ্বর কাশি। তবু গত তিন দিন থেকে এটা নিয়ে এই জ্বরের মধ্যেও… হেফাজতের আমির, আল আমিন সংস্থা সবাই একটা কমিটমেন্ট দিসে ভাস্কর্য নিয়ে কোন বক্তব্য রাখবে না।
মাহফিলে মামুনুল হকের বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে দিনভর যে উত্তেজনা ছিল সেটিকে ‘সামান্য’ উল্লেখ করে বলেন, যেরকম ঝামেলা হবে আশঙ্কা করছিলাম তার তুলনায় সামান্য ঝামেলা হইছে। আমাদের নেতাকর্মীরা তিনটা জায়গায় পজিশন নিছে। এক জায়গায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, এক জায়গায় হাটহাজারী যুবলীগ, আরেক জায়গায় হাটহাজারী ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ- তিনটা জায়গায় পজিশন করাইছে আরকি। কিন্তু এর মধ্যে কিন্তু মামুনুল হক ওরা আগেই চলে আসছে আর কি। ওরা বোধহয় রাতেই চলে আসছে।
মামুনুল হক মঞ্চে থাকতে পারেন জানিয়ে তিনি বলেন, এতক্ষণে বোধহয় তিনি মঞ্চেও উঠে গেছেন। ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলবে না তিনি। যদি বলে তাহলে তখন আমরা পদক্ষেপ নেবো। আমরা ওয়েট করি না একটু।
এর আগে বৃহস্পতিবার মামুনুল হককে প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছিল চট্টগ্রামের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই সকাল থেকে কয়েকশ নেতা কর্মী নিয়ে বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থান নেন নগর যুবলীগের নেতারা। অন্যদিকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেওয়ার কথা থাকলেও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ আসার পর বিকেলে কয়েকশত নেতাকর্মী নিয়ে শুধুমাত্র নগরীর অক্সিজেন মোড়ে অবস্থান নেয় নগর ছাত্রলীগ।
এদিকে শুক্রবার জুমার পর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর চরমোনাই পীর সৈয়দ ফয়জুল করীম এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের অনুসারী মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা জাতীয় বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করে পুলিশ। মিছিল থেকে সাত-আটজনকে আটক করে রমনা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
[media type="image" fid="99074" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]
রমনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম বলেন, জুমার নামাজের পর হঠাৎ ১০০-১৫০ জনের মতো মুসল্লি ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে একটি মিছিল বের করেন। আমরা থামিয়ে তাদের দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা সে বিষয়ে কোনো জবাব না দিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করেন। পরে আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিই। এ সময় কথা বলার মতো তাদের পক্ষে কোনো নেতা ছিলেন না।
রমনা থানার এসআই মামুন জানান, ওই মিছিল থেকে সরকারি কাজে বাধা দেয়ার জন্য সাত-আট জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে।
পরবর্তীতে বিকেলে ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাসে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘শিরকের প্রতীক মূর্তির বিরুদ্ধে কথা বলায় আমি যখন জুলুমের শিকার, এক মজলুমের পক্ষে দাঁড়াতে হাজারো তৌহিদি জনতা রাজপথে নেমেছে। তাদের এ বিক্ষোভ ছিল তৌহিদি চেতনার বহিঃপ্রকাশ। ছিল একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা ও শিরকের প্রতীকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানানোর কর্মসূচি। এই সাহসী জনতাকে স্বশ্রদ্ধ সালাম! তাদের উপর নির্মম লাঠিচার্জ ও নির্যাতনের দৃশ্য জাতি দেখেছে। বিক্ষোভকারী প্রায় অর্ধশত তৌহিদি জনতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের মুক্তি না দিলে বিক্ষোভ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এক জুলুমের প্রতিবাদে হাজার মানুষের বিক্ষোভ হলে পরবর্তী জুলুমের প্রতিবাদে লক্ষ জনতার বাঁধভাঙা বিক্ষোভ নেমে আসবে রাজপথে এটাই স্বাভাবিক। দায়িত্বশীল মহলের যথাযথ পদক্ষেপের প্রতীক্ষায় রইলাম।’
[embed]<iframe src="https://www.facebook.com/plugins/post.php?href=https%3A%2F%2Fwww.facebook.com%2FMaolanaMamunulHaque%2Fposts%2F3451295114954652&show_text=true&width=552&height=345&appId" width="552" height="345" style="border:none;overflow:hidden" scrolling="no" frameborder="0" allowfullscreen="true" allow="autoplay; clipboard-write; encrypted-media; picture-in-picture; web-share"></iframe>[/embed]
আমারসংবাদ/জেআই