Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

ওয়াজ মাহফিলে লাউড স্পিকারে দুর্ভোগ হলে ব্যবস্থা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ৩, ২০২০, ১০:১০ এএম


ওয়াজ মাহফিলে লাউড স্পিকারে দুর্ভোগ হলে ব্যবস্থা

ওয়াজ মাহফিলে লাউড স্পিকার ব্যবহারে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর এমন নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সাতক্ষীরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার ঝড় উঠেছে।

সাতক্ষীরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ইন্দ্রজিত সাহা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংসদের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৬ষ্ঠ বৈঠকের সুপারিশ বা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ওই সুপারিশে যা বলা হয়েছিলে তা হল, দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত ওয়াজ মাহফিলে লাউড স্পিকার ব্যবহারে যে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় তা লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

ধর্ম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য শওকত হাচানুর রহমান যিনি ওই ৬ষ্ঠ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, তিনি বলেন, ওই বৈঠকে এ ধরনের কোন আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এ ধরণের কোন সার্কুলার নেই। আমরা নিজেরাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সাতক্ষীরা জেলায় এমনিতেই ওয়াজ মাহফিলের মতো অনুষ্ঠান বেশি হয় এবং সেখানে লাউড স্পিকার ব্যবহার করা হয়। আর এ কারণেই এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। লাউড স্পিকার ব্যবহারের কারণে যদি শ্রবণ মাত্রার চেয়ে বেশি ডেসিবলের শব্দ তৈরি হয় এবং যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, এটা শুধু ওয়াজ মাহফিলের ক্ষেত্রে নয় বরং যেকোনো অনুষ্ঠান বা প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে যদি পরিবেশ দূষণ হয় তাহলে সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আবাসিক এলাকায় শব্দের মাত্রা দিনের বেলা হওয়া উচিত ৫৫ ডেসিবল ও রাতে ৪৫ ডেসিবল। বাণিজ্যিক এলাকার ক্ষেত্রে এই সীমা দিনে ৬৫ ডেসিবল ও রাতে ৫৫ ডেসিবল বলা হয়েছে। আবার শিল্পাঞ্চলে দিনে ৭৫ ডেসিবল ও রাতে ৬৫ ডেসিবল পর্যন্ত শব্দ থাকা উচিত।

অন্যদিকে হাসপাতাল আছে এমন এলাকায় দিনে সর্বোচ্চ ৫০ ডেসিবল ও রাতে ৪০ ডেসিবল গ্রহণযোগ্য মাত্রা রাখা হয়েছে। তবে আমাদের স্বাভাবিক কথাবার্তার মাত্রা হলো ৬০ ডেসিবল, গাড়ি চলাচলের শব্দ ৮৫ ডেসিবল, মোটরসাইকেলের শব্দ ৯৫ ডেসিবল, সাইরেন বা উড়োজাহাজ যাওয়ার শব্দ ১২০ ডেসিবল।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ক্ষমতাবলে শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ এর আওতায় নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তানজিল্লুর রহমান বলেন, কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে সেখানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় ইমামদের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, যারা ওয়াজ মাহফিল করেন তাদের সঙ্গেও আমরা কথা বলবো, তাদের মধ্যে একটা সচেতনতা সৃষ্টি হবে। স্থানীয় কোনো অসুস্থ রোগী কিংবা শিক্ষার্থীদের যাতে সমস্যা না হয় সে বিষয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারণা চালানো হবে বলেও জানানো হয়।  

আরো পড়ুন:-

পুলিশের ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল

ধর্ষণ মামলায় নূরের ৩ সহযোগী রিমান্ডে

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতার চেক হস্তান্তর

আমারসংবাদ/জেআই