নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১, ০২:৩০ পিএম
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী জানিয়েছেন, দেশে চলমান মহামারির মধ্যে যখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে ৫ হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সেই সময় ১১ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁও পরিসংখ্যান ভবন মিলনায়তনে ‘স্টেকহোল্ডার (মিডিয়া) কনসালটেশন ওয়ার্কশপ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ তথ্য জানান।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর চলমান চলমান এক জরিপে চলতি অর্থবছরের দশ মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পাওয়া গেছে জানিয়ে ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, যে বিষয়টা সামনে আসে গণমাধ্যম সে বিষয়টাকে বেশি গুরুত্ব দেয়, তখন অন্য বিষয় পেছনে পড়ে যায়। আমাদের পারসেপশন ছিল যে কোভিডের সময় কোভিডেই বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে, অন্যান্য রোগে কম মারা যাচ্ছে। কিন্তু পরে আমাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
সমীক্ষার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের চলমান যে সার্ভেগুলো আছে, সেগুলো থেকে তথ্য নিয়ে দেখলাম যে, আসলে আমাদের পারসেপশন সঠিক না।
আগের অর্থবছরের ১০ মাস এবং এ অর্থবছরের ১০ মাসের তথ্য নিয়ে এই পর্যালোচনা করা হয়েছে জানিয়ে সচিব ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, স্টাডিতে দেখা গেছে, যখন দেশে করোনা ভাইরাসে ৫ হাজার দুইশর মতো লোক মারা গেছে, তখন আত্মহত্যায় প্রায় ১১ হাজার মানুষ মারা গেছে।
মহামারির এই সময়ে দেশে শুধু হার্ট-অ্যাটাক, হার্ট-ফেইলিওর ও হৃদরোগে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যুর তথ্য পাওয়ার কথা তিনি তুলে ধরেন।
সচিব বলেন, ওই সময়ে করোনায় যত মানুষ মারা গেছে, তার চেয়ে আত্মহত্যায় বেশি মারা গেছে। অথচ আমরা শুধু করোনার পেছনেই দৌড়েছি। কিন্তু আমাদের অন্যান্য বিষয়েও যে ইন্টারফেয়ার করা দরকার, করোনার জন্য হয়ত সেগুলোতে গুরুত্ব দিচ্ছি না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর বিশ্বে আট লাখ লোক আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৬ জন।
বাংলাদেশে এ বিষয়ে সরকারিভাবে প্রকাশিত কোনো হালনাগাদ পরিসংখ্যা নেই। ২০১৪ সালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের এক গবেষণায় প্রতিদিন গড়ে ২৮ জনের আত্মহত্যার কথা বলা হয়েছিল। তাতে বছরে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ হাজার ২০০ জনের বেশি।
আর পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ১০ হাজার মানুষ ফাঁসিতে ঝুলে ও বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। এর বাইরে ঘুমের ওষুধ খাওয়া, লাফিয়ে পড়া, রেললাইনে ঝাঁপ দেওয়ার মত ঘটনাও থাকে।
আমারসংবাদ/জেআই