Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মানুষের নিরাপত্তার জন্য: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১, ০৩:৪০ পিএম


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মানুষের নিরাপত্তার জন্য: তথ্যমন্ত্রী

কারাবন্দি অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু অনভিপ্রেত জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হয়েছে বাংলাদেশের মানুষকে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা’ দেওয়ার জন্য। আর এ আইনের অপব্যবহার যাতে না হয়, সে বিষয়ে আমরা সচেতন আছি।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তথ্যমন্ত্রী তার চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুরপাড়স্থ বাসভবনে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের সময় এ কথা বলেন।

এসময় সাংবাদিকরা ‘বিএনপি ক্ষমতায় আসলে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার করবেন’ বলে দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের  বক্তব্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দিনে বেগম খালেদা জিয়া, যিনি দিনের বারোটার আগে ঘুম থেকে উঠেন না, তিনি কেন প্রত্যূষে ক্যান্টনমেন্টের বাইরে চলে গিয়েছিলেন ? তিনি কেন এদিন তারেক রহমানের সাথে ৩০ থেকে ৪০ বার কথা বললেন? এই রহস্যগুলো বের হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। তাহলেই মুখোশ উন্মোচিত হবে কারা এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছিল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তখন সদ্য সরকার গঠন করেছিল, দুইমাসও পূর্তি হয়নি, প্রায় দেড় মাসের মাথায় এই হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছিল আর এই হত্যাকাণ্ড সংগঠনের পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল সরকারকে অস্থিতিশীল করা।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে, দেশের ইতিহাসে নয় শুধু পৃথিবীর অন্যান্য দেশের নিরিখেও এতবড় একটি হত্যাকান্ডের এতগুলো আসামির বিচার কম হয়েছে। আমাদের দেশের ইতিহাসেও এতজন আসামির বিচার আর হয়নি। বিশ্ব প্রেক্ষাপটেও এতগুলো আসামির বিচার কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নেই।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের মামলার বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন নিয়ে মামলা যে কেউ করতে পারে, মামলা করার অধিকার সবারই আছে, তবে বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে বিএনপিকে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডা. শাহাদাতকে আমি অনুরোধ জানাবো তার দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রশ্ন রাখার জন্য, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সুস্থ-সবল থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতারা কেউ চট্টগ্রামে আসলেন না কেন। এমনকি চট্টগ্রামে যে সমস্ত কেন্দ্রীয় নেতা আছেন, তারাও কিন্তু নির্বাচনের সময় তার পক্ষে নামেননি। আমির খসরু মাহমুদকে দুয়েকবার দেখা গেলেও তা প্রেস কনফারেন্সের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তার দলের স্থানীয় নেতারাও প্রথমে কিছুটা সরব থাকলেও পরবর্তীতে তারা ঘরের মধ্যে চলে যান। এজন্য ডা. শাহাদাতকে বলবো এই প্রশ্নগুলো তার দলের নেতাদের কাছে করতে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হচ্ছে বাংলাদেশের সব মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। ডিজিটাল বিষয়টা আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগে ছিলনা, সুতরাং ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়টিও ছিলনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে যখন একজন সাংবাদিকের চরিত্র হনন করা হয়, একজন গৃহিনীকে যখন অপবাদ দেয়া হয়, একজন সাধারণ মানুষ যখন ডিজিটাল আক্রমণের শিকার হন, তিনি কোন আইনে প্রতিকার পাবেন, তখন কোন আইনের বলে সে নিরাপত্তা পাবে, সেজন্য একটা আইনের দরকার। এই জন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন।

মুশতাক আহমেদের মৃত্যু অনভিপ্রেত জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমিও তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি, সেখানে কারা কর্তৃপক্ষের কোন গাফেলতি ছিল কিনা সেটা খুঁজে দেখা যেতে পারে। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার যাতে না হয়, সেটির জন্য আমরা সচেতন আছি। বিশেষত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যাতে এই আইনের অপব্যবহার না হয়,  সেজন্য তথ্য মন্ত্রণালয় ও আমি ব্যক্তিগতভাবে সবসময় সচেতন আছি এবং কোনখানে এধরণের ঘটনা ঘটলে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়।

‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে কবর দেয়া উচিৎ ডা. জাফরুল্লাহ’র এমন বক্ত্যব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ তো নানা কথা বলেন, যেমন করোনার টিকার বিরুদ্ধে খুব সোচ্চার ছিলেন, আবার নিজে করোনার টিকা নিয়ে বলেছেন, এই টিকা সবার নেয়া উচিত। সুতরাং আজকে জাফরুল্লাহ সাহেব যে কথা বলেছেন দুদিন পর দেখবেন নিজের কথার বিপরীতে তিনিই আবার অন্য সুরে কথা বলবেন। সুতরাং এটার উত্তর দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করিনা।

আমারসংবাদ/জেআই