Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪,

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করা হচ্ছে: ছাত্র মজলিস 

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ১০, ২০২১, ০২:২০ পিএম


শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করা হচ্ছে: ছাত্র মজলিস 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার (১০ জুন) ছাত্র মজলিসের ছাত্র জমায়েতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ মনির হোসাইন বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করা হচ্ছে। 

তিনি বলেন, গত বছরের ১৭ই মার্চ থেকে বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ প্রায় দেড় বছর হয়ে গেছে কিন্তু এখনো খোলার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এদেশের সকল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, গণপরিবহন, নির্বাচনী প্রচারণা, অফিস-আদালত, সরকারি-আধাসরকারি-বেসরকারি সবধরনের প্রতিষ্ঠান, খেলাধুলা ইত্যাদি সব আগের মতোই চলছে কিন্তু করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির অজুহাতে শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ।

রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ২৯ মে থেকে ০৮ জুন পর্যন্ত দেশব্যাপী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বাক্ষর সংগ্রহ শেষে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর পূর্ব সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসব কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। ফলে তাদের মধ্যে নানাবিধ দুশ্চিন্তা ও মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এমনিতেই প্রশ্নবিদ্ধ। চলমান পরিস্থিতির কারণে দেশে শিক্ষার গুণগত মান ও শিক্ষার হার কমে যাচ্ছে। দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা এমনিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে অনাগ্রহী। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে তো কথাই নেই। 

কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারছে না। সেশন জট বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের বয়স বেড়েই চলছে কিন্তু চাকরির বয়স বাড়ানো হচ্ছে না। ফলে দেশে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশু-কিশোররা বিভিন্ন রকম গেমসে আসক্ত ও নানা অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠান বিমুখ শিক্ষার্থীরা এখন কিশোর গ্যাং এর সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে শিশুশ্রম। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে সমাজে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ছাত্রদেরকে সোপর্দ করা হচ্ছে। এই অবস্থায় তাদের পরিবার ও তাদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে। অনেক পরিবার তাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানের পাঠানো টিউশনের টাকায় চলত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে আজ ওইসব পরিবার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।  

সমাবেশ থেকে আরও বলা হয়, অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে জোর দাবি উঠেছে। তাদের দাবি যৌক্তিক এবং এ দাবি শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ারের সাথে সম্পৃক্ত। শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই বার বার এ দাবি জানিয়ে আসছে কিন্তু সরকার কোনভাবেই তাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করেনি। ফলে আমরা আজ রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি। এ অবস্থায় আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে স্বাস্থ্য সুরক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন দায়িত্বহীন আচরণ অব্যাহত রাখলে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের বিষ্ফোরণ ঘটবে। আর তখন কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।

ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল বিলাল আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় ছাত্র সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল জলিল, এডভোকেট তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগর উত্তর সেক্রেটারি অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ খন্দকার, কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক মুহাম্মদ আবদুল গাফফার, বায়তুলমাল ও ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক আফজাল হোসাইন কামিল, প্রকাশনা ও প্রচার সম্পাদক মুহাম্মদ জারির হোসাইন প্রমুখ।

আমারসংবাদ/জেআই