Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

আয়ে শীর্ষে থাকা নারায়ণগঞ্জ শিক্ষায় পিছিয়ে, গরিব বেশি কুড়িগ্রামে

আমার সংবাদ ডেস্ক

অক্টোবর ১১, ২০২১, ০৯:০৫ এএম


আয়ে শীর্ষে থাকা নারায়ণগঞ্জ শিক্ষায় পিছিয়ে, গরিব বেশি কুড়িগ্রামে

আয়ের দিক দিয়ে শীর্ষে থাকলেও নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষায় সবচেয়ে পিছিয়ে। অন্যদিকে দেশের সবচেয়ে গরিব জেলা কুড়িগ্রাম। সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) ও যুক্তরাজ্যের বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এই জরিপে দেশে প্রথমবারের মতো ধর্মভিত্তিক ধনী-গরিবের হার কত, তা বের করা হয়েছে। একই সঙ্গে তুলে আনা হয়েছে জাতিগত ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর মধ্যকার দারিদ্র্যের হারও। 

জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে এখন হতদরিদ্রের সংখ্যা সবচেয়ে কম নারায়ণগঞ্জে, যা শতকরা হিসাবে মাত্র ১ শতাংশের নিচে। তবে এই জেলাতেই ৬ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৪২ শতাংশই স্কুলে যাচ্ছে না। জেলাটিতে স্কুলে যাওয়ার মতো প্রতি ১০০ শিশুর মধ্যে ১৮ জনই পড়াশোনার মধ্যে নেই। স্কুলে যায় ৮১ দশমিক ৫৮ শতাংশ শিশু।

আয়ের দিক থেকে প্রথম স্থানে থাকা নারায়ণগঞ্জের পেছনেই রয়েছে প্রবাসী অধ্যুষিত জেলা মাদারীপুর। আয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে নারায়ণগঞ্জের প্রতিবেশী মুন্সিগঞ্জ। তবে মাদারীপুর ও মুন্সিগঞ্জে শিক্ষার হার নারায়ণগঞ্জের চেয়ে বেশি।

দেশের সবচেয়ে গরিব জেলা কুড়িগ্রাম। এই জেলার ৫৪ শতাংশ মানুষই হতদরিদ্র। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে বান্দরবান (৫০ শতাংশ) ও দিনাজপুর (৪৫ শতাংশ)। অন্যদিকে সম্পদে সবচেয়ে পিছিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা, যেখানে ৬৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ মানুষের একটির বেশি সম্পদ নেই। সম্পদ কমের দিক থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে কক্সবাজার (৫৯ শতাংশ) ও বান্দরবান (৫৬ শতাংশ)।

দেশে আয়বৈষম্য সবচেয়ে বেশি খুলনা জেলায়। আয়বৈষম্যে খুলনার পেছনে রয়েছে যথাক্রমে পিরোজপুর, কুষ্টিয়া ও নওগাঁ জেলা। অন্যদিকে সবচেয়ে কম আয়বৈষম্যের জেলা হচ্ছে কক্সবাজার। এরপরে আছে যথাক্রমে সিরাজগঞ্জ ও ময়মনসিংহ।

উপজেলা ভিত্তিতে দেশে সবচেয়ে গরিব হলো বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও আলীকদম এবং কুড়িগ্রামের রাজীবপুর।

আয়ের দিক থেকে ধর্ম ভিত্তিতে মুসলমানদের মধ্যে হতদরিদ্রের হার ১১ শতাংশ। এ হার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ১৪ শতাংশ। এ ছাড়া খ্রিষ্টধর্মের ২১ শতাংশ ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ২২ শতাংশ মানুষ হতদরিদ্র।

জাতিগত ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর মধ্যে চাকমাদের ৭১ শতাংশ, সাঁওতালদের ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ, মারমাদের ৬৫ শতাংশ, ত্রিপুরাদের ৭৭ শতাংশ, গারোদের ৪৭ শতাংশ, ম্রোদের ৯৮ শতাংশ, খাসিয়াদের ১৭ শতাংশ ও মণিপুরিদের ৮ শতাংশ হতদরিদ্র।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাতিসংঘ ঘোষিত ১৫ বছর মেয়াদি (২০১৫-৩০) টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী সব দেশ বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (মাল্টিডাইমেনশনাল পোভার্টি ইনডেক্স) ব্যবহার করে দারিদ্র্যের হার বের করতে সম্মত হয়েছে। ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ অনেক দেশ এরই মধ্যে আয়ের ভিত্তিতে দারিদ্র্য পরিমাপ বাদ দিয়ে বহুমাত্রিক পদ্ধতিতে দারিদ্র্যের হার বের করছে। বাংলাদেশ এখনো শুরু করেনি। এ সমীক্ষার মাধ্যমে জানা গেল, দেশের অবস্থানটা ঠিক কোথায়। তাই বাংলাদেশও আয়ের ভিত্তি বাদ দিয়ে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক দিয়ে দারিদ্র্য পরিমাপ করবে আগামীতে।

আমারসংবাদ/জেআই